মাটির কিছু নমুনা সংগ্রহ করার জন্যে পাহাড়ে উঠে এসেছে হ্যালার্ড। ঘোড়ার খুরের শব্দে পেছন ফিরে অচেনা এক লোককে দেখতে পেল। লম্বায় ওর সমান হবে আগন্তুক, কিন্তু তুলনায় কাঁধ আর বুক অনেক চওড়া। কালো জীর্ণ একটা হ্যাট মাথায়, পরনে রঙজ্বলা শার্ট, তারওপর চামড়ার ভেস্ট; এবং উরুতে জোড়া হোলস্টার, পিস্তল দুটো যেন নিতান্ত হেলাফেলা করে রাখা।

কাছাকাছি হওয়ার পর ওর দিকে তাকিয়ে স্মিত হাসল আগন্তুক। ভাগ্য কেমন যাচ্ছে আজ, পাওয়া গেল কিছু? হালকা সুরে জানতে চাইল সে।

আগন্তুকের চোখে চোখ রাখল জেফরি হ্যালার্ড। জেনে-শুনে এখানে ক্লেইম করেছি আমি। আজ না হলেও কাল নিশ্চই পাওয়া যাবে। ভাগ্য সুপ্রসন্ন না হওয়ার কোন কারণ নেই, যেহেতু এখানে আমিই প্রথম এসেছি।

ছোট্ট করে মাথা ঝাঁকাল লোকটা। হয়তো। তুমিই তাহলে জেফরি হ্যালার্ড?

লোকটিকে ঠিক সহ্য করতে পারছে না হ্যালার্ড, প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাস লক্ষ্য করছে আগন্তুকের মধ্যে, অথচ মুখে পাথুরে নির্লিপ্ততা। হ্যাঁ, আমিই জেফরি হ্যালার্ড। কি করতে পারি তোমার জন্যে?

কিছু না, মাথা নাড়ল সে। শহরটা দেখে কৌতূহল হলো। নতুন শহর দেখতে ভাল লাগে আমার, হিসেব করতে ইচ্ছে করে কত দিন টিকে থাকবে শহরটা।

আচমকা আড়ষ্ট হয়ে গেল হ্যালার্ডের দেহ, সরু চোখে আগন্তুককে দেখল। দৃঢ় হয়ে গেছে চোয়ালের পেশী, পিঠ টানটান করে দাঁড়াল ও। ভাল করে দেখে রাখো, স্ট্রেঞ্জার! কাটা কাটা স্বরে, অসম্ভব গাম্ভীর্যের সঙ্গে কথাগুলো বলল স্কুল মাস্টার। এ শহর টিকে থাকবে!

হয়তো, হয়তো না, জেফরি হ্যালার্ডের উত্তেজনা উপেক্ষা করল সে। আসলে সোনা-রূপা খুব আপেক্ষিক জিনিস। এই আসে তো এই যায়। শুধু সোনার খনি পাশে থাকলেই কোন শহর গড়ে ওঠে না। শহর গড়ে তোলার জন্যে আরও অনেক কিছু দরকার।

তাই নাকি? হয়তো, হয়তো না। সোনা ছাড়া আর যাই লাগুক, সবই আছে আমাদের।

আগন্তুকের মুখে হাসি দেখে গা জ্বলে গেল হ্যালার্ডের। নিজেকে কি ভাবে এই লোকটা? রাগে কিছু বলতে গিয়েও নিজেকে নিবৃত্ত করে নিল ও।

আর কিছু না বলে হ্যাটের কিনারায় আঙুল ছুঁয়ে সামান্য নড করল লোকটা, তারপর ঢাল বেয়ে নেমে গেল নিচে। ত্যক্ত মনে নিজের ক্লেইমে বন্ধুদের কাছে ফিরে এল হ্যালার্ড। অবাক হয়ে দেখল মিটিমিটি হাসছে জো হারপার, আয়েশ

করে সিগার টানছে। তাহলে দেখা হলো তোমাদের? হেসে জানতে চাইল সে।

কার সঙ্গে?

পরিচয় দেয়নি বুঝি? লসন।

ও ড্যানি লসন? থমকে গেল হ্যালার্ড, তারপর ক্ষীণ হাসল। ওকে আমার পছন্দ হয়নি।

তাই? অবশ্য অনেকেই পছন্দ করে না ওকে। তাতে ওরও কিছু করার নেই।

হতে পারে, বলে আর এক মুহূর্তও দাঁড়াল না জেফরি হ্যালার্ড। শহরে যাচ্ছি আমি, জো। হ্যান্স কোবার্ন, ফেল্টন আর আরও কয়েকজনের সঙ্গে আলাপ করব। দেখি, সিটি কাউন্সিল গঠনের ব্যাপারে কি বলে ওরা।

শহরের ঠিক মাঝামাঝি ডিক ফেল্টনের পত্রিকা অফিস। সামনের কামরাটাকে অফিস হিসেবে ব্যবহার করে সে, পেছনের কামরায় মেশিন আর অন্যান্য জিনিসপত্র। অ্যাডোবির তৈরি দালানে এখনও চুনকাম করা হয়নি, আসলে সুযোগই পাচ্ছে না ফেল্টন। জেরেমি টাউনে প্রতিটা দিন বা রাতই রোমাঞ্চকর; খুন-জখম, মারপিট আর লুঠপাটের ঘটনার বর্ণনায় ঠাসা থাকে ওর পত্রিকা।

নিজের চেয়ারে বসে প্রাফ দেখছিল ফেল্টন। এসময়ে সাধারণত কাজ থাকে ওর। দুপুর থেকে পরের সংখ্যার জন্যে কাজ শুরু করে।

পায়ের শব্দে মুখ তুলে তাকাল সাংবাদিক। পঞ্চাশ ছুঁইছুঁই করছে বয়স, কিন্তু দেখে বোঝা যায় না। পরিশ্রমী সে, অকপট এবং সৎ।

সহসা পেছনে গুলির শব্দে চমকে উঠল জেফরি হ্যালার্ড। ঝট করে ঘুরে দাঁড়াল, রাস্তার ওপাশে চলে গেল দৃষ্টি। বড়সড় একটা সেলুনে জুয়ার আসর বসিয়েছে এক লোক, হট্টগোল আর মারামারি লেগেই থাকে ওখানে।

সাতসকালেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ব্যাটউইং দরজা ঠেলে প্রায় ছিটকে বেরিয়ে এল লোকটা, টলছে মৃদু মৃদু। হাঁটু ভেঙে মাটিতে পড়ে গেল সে। রক্তাক্ত শরীরে কষ্টে-সৃষ্টে উঠে দাঁড়াল একটু পর, সমানে খিস্তি করছে কারও উদ্দেশে।

সেকেন্ড কয়েক পর যমদূতের মত ঠিক সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখল সে লোকটাকে, কখন সেলুন থেকে পিছু পিছু বেরিয়ে এসেছে টের পায়নি। বিশালদেহী, দয়া-মায়ার ছিটেফোঁটাও নেই নির্জীব নীল দুই চোখে; আছে কেবল শীতল নির্বিকার দৃষ্টি। শার্টের হাতা গোটানো লোকটার, সবল পেশী কিলবিল করছে বাহুতে।

গুলি খাওয়া লোকটাকে যথেষ্ট সময় দিল সে। পিস্তল হাতে দাঁড়িয়ে থাকল, কোমরের কাছে স্থির হয়ে আছে ভয়াল দর্শন কোল্ট। তারপর, একেবারে শেষ মুহূর্তে মাথায় গুলি করে আহত লোকটাকে ফেলে দিল।

দরজার দিকে পা বাড়াতে উদ্যত হয়েছিল হ্যালার্ড। কিন্তু কাঁধে বলিষ্ঠ একটা হাতের অস্তিত্ব অনুভব করল ও। হাতটা ডিক ফেল্টনের। দেখো, বাছা, তুমি এখন কি ভাবছ জানি আমি, কিন্তু নাক গলিয়ো না ওখানে। স্রেফ মারা পড়বে।

কাঁধ থেকে হাতটা ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করল হ্যালার্ড। কিন্তু এটা তো স্রেফ ঠাণ্ডা মাথায় খুন!

আস্তে কথা বলো! টেনে তাকে ভেতরে নিয়ে এল ফেল্টন। কে বলল খুন? যে লোকটা মারা গেল তার হাতেও পিস্তল ছিল, সমান সুযোগ পেয়েছে সে। সুতরাং খুন নয় এটা, বরং সবাই বলবে ফেয়ার ডুয়েল। গুলিটা কে করল জানো?

কে? আপনা আপনিই প্রশ্নটা মুখ ফস্কে বেরিয়ে গেল।

আইক জেসাপ।

আইক জেসাপ! এখানে!?

কেন, এখানে আসা নিষেধ নাকি ওর? সোনা, হ্যালার্ড, সোনা টেনে এনেছে সবাইকে। জুয়াড়ী হিসেবে যেমন খ্যাতি, তেমনি পিস্তলেও চালু ওর হাত। যে লোকটা মারা গেল সে হয়তো তাস খেলতে গিয়ে জেসাপের চুরি ধরে ফেলেছিল, হয়তো প্রতিবাদও করেছে। কিন্তু পরিণতি তো নিজের চোখে দেখলে। জেসাপ আপাদমস্তক চোর, কিন্তু ওর মুখের ওপর কথাটা বলা যেমন কঠিন, তেমনি প্রমাণ করাও কঠিন।

কিন্তু…

বোসো, কফি তৈরি হচ্ছে, বাধা দিল ফেল্টন।

অসন্তোষ চেপে রেখে একটা চেয়ারে বসল হ্যালার্ড। জেদ চাপছে ওর, কিন্তু ডিক ফেল্টনের মুখের ওপর রা করতে ইচ্ছে করছে না। মানুষটা রগচটা, এবং অভিজ্ঞও বটে। পশ্চিমের বহু জনপদে, পা পড়েছে তার, জেরেমি টাউনের মত অন্তত দশটা শহর গড়ে উঠতে দেখেছে। সাবধানী মানুষ না হলে এতদিন টিকে থাকতে পারত না।

হাত বাড়িয়ে টেবিলের ওপর থেকে প্রাফটা টেনে নিল হ্যালার্ড। একটা পৃষ্ঠায় বড়বড় করে লেখা: গত চব্বিশ ঘণ্টায়, … জন নিহত।

হ্যালার্ড কাগজটা লক্ষ্য করেছে দেখে স্মিত হাসল ফেল্টন, টেবিলে দুটো মগ নামিয়ে রাখল সে। সংখ্যা কিন্তু বসাইনি এখনও, কারণ দিন শেষ হয়নি। আরও কজন যে মরবে কে জানে, রাতে হিসেব করে বসিয়ে দেব।

মানুষের জীবনের মূল্য কত কম, জেরেমি টাউনে না এলে সেটা বোধহয় বোঝা সম্ভব হত না, আনমনে ভাবল হ্যালার্ড। সচেতন এবং দায়িত্বশীল কিছু লোককে নিয়ে সিটি কাউন্সিল গঠন করতে চাইছি আমি, দীর্ঘশ্বাস ফেলে মূল প্রসঙ্গ তুলল ও। ফেল্টন, তুমি কি যোগ দেবে?

মাথা নাড়ল সে। উঁহু, এ কাজের যোগ্য নই আমি। খবরের কাগজ বের করি, এটাই আমার কাজ। তবে তোমার ভুলগুলো শুধরে দিতে পারব, আর যখন ঠিক কাজটা করবে তোমাদের পাশে থাকব আমি।

একটু থেমে কফিতে চুমুক দিল সাংবাদিক। এই প্রেস ছিল অন্য এক লোকের, স্রেফ ভাগ্যের চক্করে আমার হাতে এসে পড়ে। লোকটার সঙ্গে আমার যখন পরিচয় হয় অজ্ঞাত আততায়ীর গুলিতে আহত হয়ে তখন মরতে বসেছে সে। কেউ ছিল না ওর। যথাযযাগ্য মর‍্যাদায় কবর দেব—এই প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে আমাকে প্রেসটা দিয়ে যায় সে। অবশ্য ওর কাছে আরেকটা প্রতিজ্ঞাও করেছি-সত্যি কথা বলব, যাই ঘটুক না কেন, শুধু সত্যি কথাই বলব; এবং এতদিন ধরে, যেখানেই গেছি, তাই করেছি আমি।

মাথা ঝকাল হ্যালার্ড। শুনে খুশি হলাম। …যখনই মনে হবে ভুল হচ্ছে আমার, জানাতে দ্বিধা কোরো না।

মিনিট কয়েক চুপ করে থাকল দুজনেই। নীরবে কফির স্বাদ উপভোগ করছে। কিন্তু কফির স্বাদ তেতো মনে হচ্ছে হ্যালার্ডের, একটু আগে দেখা ঘটনাটা ভুলতে পারছে না।

এখানে আইন শৃঙ্খলা দরকার, শেষে নীরবতা ভাঙল হ্যালার্ড। এভাবে তো চলতে পারে না! কয়েকজনকে মার্শাল হিসেবে নিয়োগ দিয়েছি আমরা, কিন্তু জানোই তো, দুটো দিনের বেশি টিকতে পারেনি কেউ। কঠিন, সমর্থ কাউকে দরকার। তুমি কি কারও নাম প্রস্তাব করবে?

দুঃখিত, এবারও সাহায্য করতে পারছি না তোমাকে।

ড্যানিলসন নামে একজনের কথা শুনেছি আমি।

উঁহু, আমি চাই না এখানে আসুক সে।

চাও না! তাহলে যোগ্য নয় সে?।

তা নয়। ড্যানি লসন লোক হিসেবে ভাল, আর পিস্তলে ওর চেয়ে চালু হাত এখন পর্যন্ত দেখিনি আমি, যদিও জীবনে বহু পিস্তলবাজ দেখেছি। স্নায়ুর জোর আছে ড্যানের, সবচেয়ে বড় কথা তাঁর আছে সূক্ষ্ম বিচার শক্তি, যেটা পশ্চিমের অনেক-সেরা বন্দুকবাজের নেই।

তাহলে ওর ব্যাপারে আপত্তি করছ কেন?

ক্ষণিকের জন্যে কি যেন ভাবল ডিক ফেল্টন। লসন আমার কাছে ছেলের মত, বিপদে একবার আমাকে সাহায্য করেছিল ও। আমি চাই না এ ধরনের কোন শহরের দায়িত্ব নিক ও। কারণ জেরেমি টাউনের মত শহরকে ঠাণ্ডা করতে হলে আগে গুলি চালিয়ে বেপরোয়া লোকগুলোকে থামাতে হবে। আমি চাই না আবারও গোলাগুলিতে জড়িয়ে পড়ক সে, এমনিতেই ওর শত্রুর অভাব নেই।

তর্ক করার প্রবৃত্তি হলো না জেফরি হ্যালার্ডের, তেতো হয়ে গেছে মন।

কাঁটাতারের ব্যাপারটা কিন্তু অনেকেই পছন্দ করছে না, মনে করিয়ে দেয়ার সুরে বলল সাংবাদিক।

মনে পড়ল হ্যালার্ডের। একদল লোক ভাড়া করে শহরের চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে ওরা, অবশ্য চারটা প্রবেশদ্বার রেখেছে। যাতায়াতের সুবিধের জন্যে দুটো রাস্তাও বানিয়েছে। কেন?

এখনও কিছুই স্থির হয়নি, হ্যালার্ড। অনেকের ধারণা আগে-ভাগেই কাজটা করে বসেছ তুমি। এজন্যে তোমাকে ধন্যবাদ দেবে না কেউ। ঘেরা অবস্থায় থাকতে চায় না কেউ, এখানে যারা এসেছে বড়লোক হয়ে ফিরে যেতে চায়। তবে তোমার পক্ষে আছি আমি। গতকালের কাগজটা দেখেছ তো, এ নিয়ে একটা সম্পাদকীয় লিখেছি?

মাথা ঝাঁকাল স্কুল মাস্টার। ধন্যবাদ, ডিক।

মিনিট দশ পর চিন্তিত মনে হ্যান্স কোবার্নের অফিসে ঢুকল ও।

হিসাবপত্র দেখছিল টড মার্টিন, পদশব্দে কাগজ থেকে চোখ তুলে তাকাল। হ্যালার্ডকে দেখে হাসি ফুটল মুখে, উঠে দাঁড়িয়ে হাত বাড়াল। বোসো, মি. হ্যালার্ড। মি. কোবার্নকে খবর দিচ্ছি, বলে ভেতরে চলে গেল সে।

খানিক পর উপস্থিত হলো হ্যান্স কোবার্ন। কফির ফরমাশ দিয়ে হ্যালার্ডের দিকে ফিরল সে, সিগার অফার করল। তোমাদের শহরের খবর কি, বলো এবার।

ভাল না। খুনে-বদমাশে ভরে গেছে। সন্ধ্যার পরপরই নরক হয়ে ওঠে শহরটা।

এখানে আসলে কঠিন একজন লোক দরকার, যে শক্ত হাতে সামাল দিতে পারবে সবকিছু।

বেন হকিন্স চেষ্টা করেছিল, ও তো যথেষ্ট কঠিন লোক। কই, একটা রাতও টিকতে পারল না।

বেন হকিন্স ওদের কাছে নস্যি, প্রায় তাচ্ছিল্যের সুরে বলল সোনা ব্যবসায়ী। তুমি বরং অন্য কারও কথা ভাবো, জেফ-শ্যানন, অ্যাৰ্প বা লসন…

ওরা তো খুনী ছাড়া আর কিছু নয়, মুখের কথার মত পিস্তলের গুলি চালাতে পছন্দ করে!

এরকম গোলমেলে শহর ঠাণ্ডা করার জন্যে এমন লোকই দরকার, জেফ। খোঁজ করে দেখো, কাউকে আশপাশে পাও কিনা।

না। জেনে-শুনে একজন খুনীকে ভাড়া করতে পারি না আমি! একগুয়ে স্বরে বলল হ্যালার্ড।

আমার ধারণা একসময় মত বদলাবে তুমি, তখন হয়তো দেরি হয়ে যাবে।

হয়তো।

সাপ্লাইয়ের ব্যাপারে আলোচনা করা যাক, কফি আসতে চুমুক দিয়ে প্রসঙ্গ পাল্টাল কোবার্ন। সব তৈরি রেখেছ তো?

মাথা ঝাঁকাল সে। আমার দুশ্চিন্তা হচ্ছে সাপ্লাইটা আদৌ মন্টানায় পৌঁছবে কিনা। সোনার কথা জেনে গেছে সবাই, শয়তানগুলো ছিনিয়ে নিলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

দুজনকে ভাড়া করেছি আমি। কিন্তু ওই যে বললাম, শক্ত কিছু লোক দরকার, ওরা মোটেও তেমন নয়। নিশ্চিন্ত হতে পারছি না আমি। ড্যানি লসনের সাথে দেখা হলো বিগ বে-তে। ওকে কাজটা নিতে বললাম, কিন্তু আগ্রহ দেখায়নি সে।

ড্যানি লসন?

হ্যাঁ, এদিকেই এসেছে ও।

কেন?

শ্রাগ করল কোবার্ন। কি করে বলি ওর মনে কি আছে! তবে এটুকু নিশ্চিত জানি অন্য সবার মত এখানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে আসেনি সে। …সুবর্ণ একটা সুযোগ চলে এসেছে তোমার সামনে, জেফ, প্রস্তাব দিতে পারো ওকে।

না। ওর মত কাউকে আইনের লোক হিসেবে জেরেমি টাউনে দেখতে চাই আমি। ওর আর শেইন থমসনের মধ্যে পার্থক্য কি?

লিভারি সিটির ঘটনাটা ভেবে দেখো। খারাপ কিছু লোককে হটিয়ে দিয়ে শহরটা পরিষ্কার করেছিল ও, মাত্র দশ দিনে। জেরেমি টাউনের চেয়ে কোন অংশে খারাপ ছিল না ওখানকার অবস্থা।

দরকার হলে আমি নিজেই তারা পরব, তবু ওরকম কাউকে ডাকব না!

স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকল কোবার্ন। বোঝার চেষ্টা করল মানুষটা বোকা কিনা, বা ঠিক কি ভাবছে সে। পুরোপুরি ভাল মানুষ, সৎ এবং প্রখর নীতি-জ্ঞান লোকটির, একজন স্কুল মাস্টারের পক্ষে এটাই স্বাভাবিক। খুন-জখমকে মনেপ্রাণে ঘৃণা করে। সমস্যাটা এখানেই। জেফরি হ্যালার্ডের ধারণা নেই যে অন্যায়কে দমাতে মাঝে মধ্যে পাল্টা আঘাতেরও দরকার হয়, শুধু নীতি-কথা বা উপদেশ যথেষ্ট নয়।

যাকগে, বাদ দাও ওসব, প্রসঙ্গ বদলাল কোবার্ন। নতুন আসা লোকগুলো সম্পর্কে কি ভাবছ তুমি?

দেখেছি ওদের। যথেষ্ট জমি আছে আশপাশে, ইচ্ছে করলে যে কোন জায়গায় ক্লেইম করতে পারে ওরা।

কিন্তু থমসন বা রত্নরা বোধহয় খুশি হবে।

কেন?

সন্ধ্যার পর মাইনাররা কোথায় যায়, জানো তুমি? সেলুনে গিয়ে দেদারছে পান করে ওরা, জুয়া খেলে। সারা দিন বেগার খেটে যে পরিমাণ সোনা তোলে, তার অর্ধেকই জুয়ার টেবিলে হেরে আসে। ধান্ধাবাজ এসব জুয়াড়ীদের তাড়াতে হবে, জেফ। নইলে শেষে দেখবে জুয়ার টেবিলে একে একে খুন হয়ে যাচ্ছে নিরীহ মাইনাররা।

কোন ভাবে কি সবাইকে মানা করা যায় না? জুয়া না খেললেই তো টাকা হারানোর আশঙ্কা থাকে না আর।

অন্তত ত্রিশজন ধান্ধাবাজ লোক আছে এখানে, জেফ, যারা রাতের অপেক্ষায় সারাটা দিন কাটিয়ে দেয়। তক্কে তক্কে থাকে ওরা, যে কোন উসিলা পেলে হামলে পড়ে মাইনারদের ওপর। গায়ে-পড়ে ঝামেলা বাধায়, মারামারি করে। নিজেদের মধ্যেও লাগালাগি আছে ওদের। মাইনাররা শহরে আসবেই, সারা দিন কাজ করার পর সন্ধেয় হুইস্কি না গিললে শান্তি পাবে না ওরা, তাছাড়া টাকার গরম দেখাতে সবারই ভাল লাগে।

কই, আমি তো যাই না।

নিজের মত ভাবছ কেন সবাইকে সবাই তো তোমার মত মাস্টার নয়।

উঠে দাঁড়াল হ্যালার্ড। তাহলে ওই কথাই থাকল। পরশু সকালে রওনা দেবে সাপ্লাই। রাতে আরেকবার আসব আমি।

নিজের ক্লেইমে ফিরে এল জেফরি হ্যালার্ড। শহরের কথা মাথা থেকে সরাতে পারছে না। অন্যদের চেয়ে তার চিন্তাই বেশি, কারণও আছে। এখানে এসে তিন বন্ধু ঠিক করে হ্যালার্ডের পরামর্শ অনুযায়ী চলবে ওরা। কারণ সে শিক্ষিত, জ্ঞানী ও মর‍্যাদাবান লোক। পরবর্তীতে শহর কমিটির প্রধানও হয়ে যায় সে। এ জন্যেই শহরের যে কোন ব্যাপারে ওর মাথাব্যথা বেশি। তাছাড়া ও নিজেও মনমত একটা শহর গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছিল, স্বপ্নটা যে এত তাড়াতাড়ি ধূলিসাৎ হয়ে যাবে তা ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারেনি।

ক্লেইমে কাজ করছিল অন্যরা, ওকে চিন্তিত দেখে হাতের গাঁইতি ফেলে এগিয়ে এল জো হারপার। পুরানো একটা ন্যাকড়ায় হাত মুছে কেবিনে গিয়ে ঢুকল সে, ফিরে এল হুইস্কির বোতল হাতে। কথা হলো?

মাথা ঝাঁকাল হ্যালার্ড, হারপার বোতল বাড়িয়ে ধরতে সেটা নিয়ে চুমুক দিল।

কি ঠিক করলে তোমরা?

দুজন লোক ভাড়া করেছে কোবার্ন, তবে সে নিজেই ওদের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না। ড্যানি লসনকে নাকি প্রস্তাব দিয়েছে, কিন্তু রাজি হয়নি লোকটা। ওর মতে লসনের মত কাউকে মার্শাল হিসেবে নিয়োগ দেয়া উচিত আমাদের।

লসন শহরে এসেছে নাকি? নিচু স্বরে শিস দিল জ্যাক ক্লেটন। একটা দারুণ খবর!

এত খুশির কি হলো? সন্দিহান চোখে ক্লেটনের দিকে তাকাল হ্যালার্ড।

নিশ্চয়ই আছে। তোমারও খুশি হওয়া উচিত, জেফ। কারণ ওর মত লোক আশপাশে থাকলে ঝামেলাবাজদের অনেকেই পিছিয়ে যাবে, খারাপ একটা কাজ করার আগে অন্তত কয়েকবার চিন্তা করবে। তবে…আমি ভাবছি এখানে কেন এসেছে ও, কাজ ছাড়া কোথাও ঘুরে বেড়ানোর লোক নয় সে।

ভাবতে থাকো, উন্মা প্রকাশ করল হ্যালার্ড। যদিও, আমার ধারণা, তাতে সময় নষ্ট ছাড়া আর কোন কাজ হবে না তোমার। সবাই এমন ভাবে ওর কথা বলছ যেন সত্যিই করিমা লোক সে, জেরেমি টাউনে পা রাখলেই সব সমস্যা মিটে যাবে, কিনকেডের দল লেজ তুলে পালাবে?

দুর্বোধ্য হাসি দেখা গেল জো হারপারের ঠোঁটে, তবে তর্ক করার প্রবৃত্তি হলো বলে ক্লেইমের দিকে চলে গেল সে। হ্যালার্ডের পক্ষে এরকম চিন্তা করা খুবই স্বাভাবিক, ভাবছে ও, শান্তিপ্রিয় মানুষ সে এবং পিস্তলবাজি বা খুনোখুনি মনেপ্রাণে ঘৃণা করে। তার যুক্তিকে অস্বীকার করার উপায় নেই, অস্থির কোন শহরকে ঠাণ্ডা করতে গেলে পাইকারি হারে কিছু মানুষ খুন হবে, নিরীহ মানুষের মরার সম্ভাবনাও থাকবে।

জেরেমি টাউনের ব্যাপারটাও ব্যতিক্রম নয়। বাধা পেলে বেপরোয়া হয়ে উঠবে কিনকেড বা রন্সদের মত লোকেরা। যাচ্ছেতাই ব্যাপার নিয়ে বসবে, ওদের তোপের মুখে পড়বে সাধারণ ব্যবসায়ী বা নিরীহ মাইনাররা। আইনের লোক সবাইকে রক্ষা করতে পারবে না, এটাই স্বাভাবিক। জেফরি হ্যালার্ডের আপত্তি এখানেই, মেনে নিতে পারছে না অস্ত্রের জোর খাঁটিয়ে শহরটাকে জঞ্জালমুক্ত করবে কেউ। সবকিছুতে সোজা পথটি দেখতে পায় সে, তার ধারণায় নেই যে কিনকেডের মত মানুষদের বশে আনতে হলে পিস্তলের নল উচিয়ে বাধ্য করতে হয়। একমাত্র নিজের চেয়ে কঠিন মানুষের কাছেই নতি স্বীকার করবে ওরা।

কিন্তু হ্যালার্ডের আন্তরিকতায় কোন খাদ নেই। জেরেমি টাউনকে পরিকল্পিত একটা শহর হিসেবে গড়ে তুলতে চায় সে। একটা স্কুল, গির্জা, হাসপাতাল, অথর্বদের জন্যে আশ্রয়কেন্দ্র…এসবের স্বপ্ন দেখে মানুষটা। তার প্রত্যাশা অযৌক্তিক কিছু নয়, এবং তা সম্ভবও। তবে সবার আগে এখানে শান্তি আসা দরকার। খারাপ মানুষগুলোকে তাড়াতে হবে, কিংবা ভাল আচরণ করতে বাধ্য করতে হবে। সেই কাজটি সবাই পারবে না, গুটি কয়েক লোকের মধ্যে ড্যানি লসন একজন।

অরিগনের শুরুতেও ঠিক এমন ঘটেছিল, কিন্তু শক্ত হাতে শহরটা সাফ করেছে লসন। শান্তিপ্রিয় অনেকেই ওর রুদ্র মূর্তি পছন্দ করতে পারেনি, তবে অধিকাংশ অরিগনবাসী খুশি হয়েছিল। প্রয়োজন মানুষকে কঠিন, এমনকি নির্মম হতেও বাধ্য করে, এটাই হচ্ছে প্রকৃত সত্য। অরিগনের মত এখানেও একজন ড্যানি লসনের দরকার, যে শক্ত হাতে সামাল দেবে বেপরোয়া লোকগুলোকে, শহরটায় শান্তি আনবে।

জেফরি হ্যালার্ডকে একজন সম্পূর্ণ মানুষ ভাবে জো হারপার। জীবনে অনেক লোক দেখেছে হারপার, কিন্তু তাদের কেউই একচেটিয়া ভাবে ভাল নয়, ভালমন্দের মেশাল। পশ্চিমে জীবনযাত্রার যে ধরন তাতে কারও পক্ষেই পুরোপুরি ভাল হওয়া সম্ভব নয়। জেফরি হ্যালার্ডই তার দেখায় সমস্ত মানুষের মধ্যে একমাত্র ব্যতিক্রম। বন্ধুরা সেজন্যে সমীহ করে স্কুল মাস্টারকে। হয়তো ওর পেশাই ওকে এতটা ভাল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছে।

একটা ব্যাপারে তিন জে একমত। জেরেমি শেভলিনের নাম ওরা মুছে যেতে দেবে না। যে স্বপ্ন নিয়ে এ শহরের উদ্দেশে যাত্রা করেছিল, তা পূর্ণ করবে। চার পেশার চারজন লোক, নিখাদ বন্ধুত্ব ছিল ওদের। একজন এখন আর নেই তো কি হয়েছে, তার দায়িত্বটুকু ভাগাভাগি করে নিতে পারবে অন্যরা। অর্থের অভাব নেই, দরকার নিষ্ঠা আর আন্তরিকতা। যে কারও চেয়ে জেফরি হ্যালার্ডের জ্ঞান আর বিচক্ষণতা বেশি, তাই ওকেই শহর কমিটির চেয়ারম্যান বানিয়েছে। দায়িত্বটা ঠিকমত সামলাচ্ছে সে, তাতে কোন সন্দেহ নেই। ব্যর্থতা শুধু এক জায়গায় শহরের পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ নেই ওদের। সত্যি কথা বলতে কি, সন্ধের পর শহরে যায় না ওরা। জানে শহরের মানুষগুলো সুযোগের অপেক্ষায় থাকে, গায়ে পড়ে ঝগড়া বাধিয়ে কিংবা জোর করে সোনা কেড়ে নিতে জুড়ি নেই। ওদের। তেমন কিছু না হলেও জুয়ার টেবিল তো আছেই, সস্তা চুরি ধরতে পারে না মাইনাররা। বেশিরভাগ লোকই হেরে আসে। কেউ কেউ মেয়েদের কাছে যায়, চড়া দামে মেয়েদের সঙ্গ লাভের সুযোগ পায়।

এত কাছে শহরটা, অথচ মাইনারদের কাছে ওটা একটা ভিন্ন জগৎ। শহরের মানুষগুলো লোভী, বারকীপ থেকে হল্যার পর্যন্ত। তক্কে তক্কে থাকে ওরা, কিভাবে মাইনারদের কাছ থেকে দুটো পেনি বেশি খসানো যায়! এক বোতল হুইস্কি যেখানে অন্য শহরে এক-দুই ডলারে পাওয়া যায়, এখানে তার দাম পাঁচ ডলার। প্রতিটি পণ্য বেশি দামে কিনতে হয়। মাইনাররাও খুব একটা রা করে না, কারণ ওদের প্রতিদিনের কামাইও কম নয়। একজন কাউহ্যান্ডের বেতন মাসে চল্লিশ ডলার, কিন্তু সারা দিন একই পরিশ্রম করে হয়তো তারচেয়ে বেশি দামের সোনা একদিনে তোলা সম্ভব। রোজগার বেশি বলে খরচের ব্যাপারেও উদার এরা। হুইস্কি গিলে নিজের সুপ্রসন্ন ভাগ্যকে উদযাপন করতে চায় বোধহয়। নইলে ঝামেলার আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও প্রতিদিন শহরে যেত না ওরা।

ড্যানি লসনের চিন্তা ফিরে এল আবার। এখানে কি করছে সে? যাই করুক, ভাবল হারপার, ওর উপস্থিতি জেরেমি টাউনের জন্যে আশীর্বাদ হতে পারে। কোন ভাবে তাকে রাজি করাতে পারলে নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে। শ্যানন বা অ্যাপকেউই এতদূর আসবে না, হয়তো হাজার ডলার খরচ করলেও রাজি হবে না; কিংবা দেখা যাবে বহু দূরে আছে, এখানে পৌঁছতে পৌঁছতে যে সময় লাগবে ততদিনে শহরটা হয়তো ধ্বংসই হয়ে যাবে। অন্য কোন কাজেও ব্যস্ত থাকতে পারে ওরা। তাছাড়া যোগাযোগ করার সময় কোথায়?

সোনার চালান ঠিকমত মন্টানায় পৌঁছায় কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ হচ্ছে ওর। লম্বা পথ পাড়ি দিতে হবে, যে কোন জায়গায় আক্রান্ত হতে পারে স্টেজ। সুযোগসন্ধানী লোকের অভাব নেই। হয়তো কয়েকটা দলের মোকাবিলা করতে হতে পারে স্টেজগার্ডদের।

ট্রেইলে অচেনা তিন ঘোড়সওয়ারকে দেখতে পেয়ে যুগপৎ কৌতূহলী এবং সতর্ক হয়ে উঠল ও। শক্ত-সমর্থ গড়নের প্রথম লোকটা, স্যাডলে বসার ভঙ্গি স্বতঃস্ফূর্ত, আত্মবিশ্বাসী। পরনে নোংরা পোশাক। দাড়ি-গোঁফ কাটেনি কয়েকদিন। পেছনের দুই রাইডারের চেহারা হিংস্র এবং কর্কশ।

দ্রুত কেবিনের কাছে চলে এল হারপার। দেখল পোর্চে এসে দাঁড়িয়েছে ওর দুই বন্ধু। সন্দিহান চোখে দেখছে আগন্তুকদের।

ধীরে ধীরে এগিয়ে এল ওরা। ত্রিশ গজ দূরে এসে রাশ টেনে ঘোড়া থামাল।

নীল চোখ জোড়ায় নির্বিকার চাহনি, সরাসরি জেফরি হ্যালার্ডের দিকে তাকাল প্রথমজন। তুমিই হ্যালার্ড?

হ্যাঁ।

শুনলাম তোমাদের একজন মার্শাল দরকার। আমি গ্যারি লোফার্ট, আর আমার দুই সহকারী স্যাম আর জো চাকুরিটা নিতে পারি। বেশ কিছু গরম শহর ঠাণ্ডা করার অভিজ্ঞতা আছে আমাদের।

মাথা নাড়ল হ্যালার্ড, অর্থাৎ চাকুরিটা জুটছে না ওদের।

দাঁড়াও, জেফ, বাধা দিল ক্লেটন। তারপর গ্যারি লোফার্টের দিকে তাকাল। কিভাবে ভাবছ শহরটা ঠিক রাখতে পারবে?

বলেছি না—অভিজ্ঞতা আছে? আমাকে দুশো ডলার দিলেই চলবে, আর ওদের জন্যে একশো করে।

বেশি চাইছ, নিস্পৃহ কণ্ঠে মন্তব্য করল হারপার।

বেশি! অবাক হওয়ার ভান করল লোফার্ট। হাজারটা সমস্যা এই শহরে। সেসব তো আমাদেরই সামাল দিতে হবে, নাকি? তাহলে বেশি চাইলাম কিভাবে?

বুঝলাম। বিগ থমসনের নাম শুনেছ কখনও?।

স্মিত হাসল লোফার্ট। শুনেছি। বিগ থমসন তো আমাদের মতই মানুষ, তাই? তাই যদি হয় তবে ওকেও সামলাতে পারব।

ঠিক আছে, আপসের সুরে বলল জেফরি হ্যালার্ড। থমসন আর কিনকেডকে শহর থেকে তাড়াও আগে, তারপর চাকুরি নিশ্চিত হবে তোমাদের।

অন্যদের দিকে তাকাল লোফার্ট। আর সবারও কি একই মত?

একে একে মাথা ঝাঁকাল হারপার আর ক্লেটন।

হাত বাড়াল লোকটা। মার্শালের ব্যাজটা দিচ্ছ? আমার অথরিটি তো প্রমাণ করতে হবে।

ব্যাজ নিয়ে তৎক্ষণাৎ নিজের শার্টে এঁটে রাখল লোফার্ট, তারপর হাসতে হাসতে চলে গেল। জেরেমি টাউনের ইতিহাসে সপ্তম মার্শাল সে, অথচ শহরটার পত্তন হয়েছে মাত্র দুই মাস তিন দিন!

<

Super User