যৌবনের তীর্থক্ষেত্রে অতনুর দেশে তরুণ-তরুণীর নিত্য সমারোহ। কারও চোখে জল, কারও চোখে জ্বালা; কারও হাতে ফুল, কারও বুকে কাঁটা; কারোর হৃদয়ে অমৃত, কারোর হৃদয়ে বিষ। এই মহা-তীর্থে তনুতে তনুতে অতনু দেবতার ক্ষণভঙ্গুর দেউল, কামনার ধূপ সেখানে নিত্য জ্বলছে, ঝরাফুল মরা-হৃদয় স্তূপীকৃত হয়ে পড়ে আছে তার পায়ের তলে। যে তরুণী বুকে আশার বাতি জ্বালিয়ে এই তীর্থে এল, সে গেয়ে ওঠে–

(গান)

ওগো   সুন্দর, তুমি আসিবে বলিয়া  
        বন-পথে পড়ে ঝুরি  
রাঙা     অশোকের মঞ্জরি। 
হাসে বন-দেবী বেণিতে জড়ায়ে  
        মালতীর বল্লরি  
        নব কিশলয় পরি॥  
কুমুদী-কলিকা ঈষৎ হেলিয়া  
চাঁদেরে নেহারি হাসে মুচকিয়া,  
মহুয়ার বনে ভ্রমর-ভ্রমরী  
        ফিরিতেছে গুঞ্জরি॥  
যাহা কিছু হেরি ভালো লাগে আজ 
        লুকাইতে নারি হাসি,  
কাজ করি আর শুনি যেন বাজে  
        মিঠে পাহাড়িয়া বাঁশি।
   
এক শাড়ি খুলে পরি আর শাড়ি,  
বারে বারে মুখ মুকুরে নেহারি,  
দুরুদুরু হিয়া ওঠে চমকিয়া, 
        অকারণে লাজে মরি॥
<

Kazi Nazrul Islam ।। কাজী নজরুল ইসলাম