অন্তিম কালের কালে ও কি হয় না জানি ।
কি মায়া ঘোরে কাটালাম হারে দিনমণি।।
এনেছিলাম, বসে খেলাম,
উপার্জন কই করিলাম,
বিকশের বেলা
খাটবে না ভেলা
এলো বানি।।
জেনে শুনে সোনা ফেলে
মন মজালাম রাঙ্ পিতলে,
এ লাজের কথা
বলিব কোথা
আর এখনি।।
ঠকে গেলাম কাজে কাজে,
ঘিরিল তনু পঞ্চাশে
লালন বলে মন
কি হবে এখন
বল্ রে শুনি।।
———————————–
লালন ফকিরঃ কবি ও কাব্য, পৃ ১৯৫
রবীন্দ্র-সদনে রক্ষিত খাতার অশুদ্ধ বানানে লিখিত গানগুলো সনত্কুমার মিত্র উক্ত গ্রন্থে সম্পাদনা করে প্রকাশ করেছেন। কোন কোন ক্ষেত্রে বানান এতই অশুদ্ধ যে, তার পাঠোদ্ধার করা দুরূহ কাজ।
গানটির চরণ-বিন্যাসে অভিনবত্ব আছে। ছোট-বড় চরণ ও অন্ত্যমিল দিয়ে নাচের ভঙ্গিও ছন্দ আনা হয়েছে। ‘ঘিরিল তনু পঞ্চাশে’ পঙক্তি থেকে অনুমিত হয়, লালনের বয়স যখন পঞ্চাশ বছর, তখন গানটি রচিত হয়। এটি প্রৌঢ়ত্বে প্রবেশের বয়স। “অন্তিম কালের কালে ও কি হয় না জানি ।” সূচনা-পঙক্তিতেও একই ইঙ্গিত আছে। এ সময় লালনের চেতনায় ও মনের পরিপক্কতা এসেছে। – ওয়াকিল আহমদঃ লালন গীতি সমগ্র, পৃ. ৪২।