মতি মিয়া পাঁচ দিন পর গয়নার নৌকায় ফিরে এল। সঙ্গে নুরুদ্দিন। নিখল সাব ডাক্তার (রিচার্ড এ্যালেন নিকলসন) বলেছেন সারতে সময় নেবে। অবস্থা ভালো নয়, কাটাকুটি করতে হতে পারে। সেক্ষেত্রে মাসখানেক লেগে যাওয়া বিচিত্র নয়।

আমিন ডাক্তারের নাকি তেমন কাজকর্ম নেই। সে নিজেই দায়িত্ব নিয়েছে, সব ঠিকঠাক করিয়ে নিয়ে আসবে। মতি মিয়া অবাক হয়ে বলেছে, এক মাস যদি থাকন লাগে, তুমি খাইবা কী?

হইব একটা ব্যবস্থা। রুগী ফালাইয়া তো যাওন যায় না।

ব্যবস্থা যে কী হবে, মতি মিয়ার মাথায় আসে না। আমিন ডাক্তারের কাছে। আছে সর্বমোট সাড়ে ন টাকা। কিন্তু আমিন ডাক্তারকে মোটই বিচলিত মনে হয় না। আজরফকে অবশ্যি নিখল সাব বাসায় কাজ দিয়েছেন। নদী থেকে সে গোসলের পানি তুলে আনে, বিকালে হাসপাতালের মেঝে ঘষে ঘষে পরিষ্কার করতে হয়। যত ঘৰাঘষিই করা হোক, সাহেবের পছন্দ হয় না। মাথা নেড়ে বলেন, আরো ভালো করো। জোরে ব্রাশ করে।

খাওয়াদাওয়া সাহেবের এখানেই হয়। সে খাওয়াও রাজ-রাজড়ার খাওয়া। সকালবেলা পাউরুটি, চিনি, একটা কলা আর এক কাপ দুধ। সন্ধ্যাবেলা বই-খাতা নিয়ে বসতে হয়। কালো মোটামত এক জন মহিলা অনেককে বর্ণ-পরিচয় শেখান। একটি ব্লকবোর্ড প্ৰকাণ্ড একটা অ লিখে সুরেলা স্বরে বলেন, বল অ। সবাই সমস্বরে বলে, অ। বল আ . … .আ।

আজরফের খুব মজা লাগে। পড়া শেষ হবার পর হয় প্রার্থনা। ভদ্রমহিলা অত্যন্ত করুণ সুরে টেনে টেনে বলেন,

হে পরম করুণাময় ইশর,
তুমি তোমার মঙ্গলময় করুণার হস্ত প্রসারিত কর।
…. … … … …

প্রার্থনার জায়গায় এলেই আজরফের ভয়ভয় করে। কে জানে এরা হয়তো খিরিচান করে ফেলছে। আমিন ডাক্তার অবশ্যি বলেছে, ভয়ের কিছু নেই। খিরিানী প্রার্থনার ফাঁকে ফাঁকে মনে মনে কলেমা তৈয়ব পড়লেই সব দোষ কেটে যাবে। আমিন ডাক্তারের মতো জ্ঞানী লোককে অবিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। আজরফের আর ভয়টয় করে না। ভয় করে মতি মিয়ার। কোন কারণ ছাড়াই ভয় করে। নৌকা ছেড়ে নড়তে চায় না। আমিন ডাক্তারের ঠেলাঠেলিতে শরিফাকে দেখতে গিয়ে এক কাণ্ড। হাসপাতালের বারান্দায় মুখ ভর্তি করে বমি করে। আমিন ডাক্তার শঙ্কিত হয়ে বলে, হইল কি তোমার মতি ভাই?

বদ গন্ধ মাথার মধ্যে পাক দেয়।

তোমারে নিয়া মুশকিল। ঐটা তো ফিাইলের গন্ধ।

কিসের গন্ধ?

ফিনাইল। এক কিসিমের সাবান। খুব ভালো জিনিস।

ভালো জিনিস মাথায় থাকুক। মতি মিয়া বাড়ি ফিরে বাঁচে, নুরুদ্দিন বাপের সঙ্গে ফিরে যেতে কোনো আপত্তি করে না। মতি মিয়া বারবার জিজ্ঞেস করে, মার লাগি মন কান্দে নি নুরু?

নাহ্‌।

দুই দিন পরেই দেখবি আইয়া পড়ছে।

আইচ্ছা।

খুব বেশি হইলে এক হস্তা। এর বেশি না।

আইচ্ছা।

যাত্রা দেখতে চাস? মোহনগঞ্জে যাত্ৰা আইছে। বিবেকের পাঠ করে আসলাম মিয়া। ছয়টা সোনার মেডেল। দেখবি?

নাহ্‌।

না বললেও মতি মিয়া এক রাত মোহনগঞ্জে থেকে যায়। এত কাছে এসে আসলাম মিয়ার বিবেকের গান না শোনা পাশের সামিল। নিতি দিন তো আর এমন সুযোেগ হয় না। মোহনগঞ্জ বাজারে দেখা হয়ে যায় কানা নিবারণের সাথে। সেও খুব সম্ভব আসলামের গান শুনতে এসেছে। সে একটা বড়ো কাপড়ের দোকানের সামনে বসে ছিল। তার মুখ দিয়ে ভকভক করে দেশী মদের গন্ধ বেরুচ্ছে।

ও নুরা, দেখছ? হই দেখ কানা নিবারণ।

কোন জন?

কালামতো মোটা। লম্বা বাবড়ি।

চউখ তো দুইটাই আছে, ইনারে কানা নিবারণ ডাকে ক্যান?

ছেলের কথায় মতি মিয়া বড়ই খুশি হয়। ছেলে চুপচাপ থাকলে কী হবে, বুদ্ধিশুদ্ধি ঠিকই আছে। মতি মিয়া হাসিমুখে বলে, মাইনষের খিয়াল! মাইনষের খিয়ালের কি ঠিক-ঠিকানা আছে?

ছেলেকে দাঁড় করিয়ে মতি মিয়া চলে যায় কানা নিবারণের সামনে। দেখা না করে যাওয়াটা ঠিক না।

নিবারণ ভাই, শইলডা বালা?

কানা নিবারণ কথা বলে না, ভ্রূ কুঁচকে তাকায়।

চিনছেন আমারে? আমি মতি। সোহাগীর মতি মিয়া।

কানা নিবারণ ঘঘালাটে চোখে তাকায়, উত্তর দেয় না।

আসলাম মিয়ার গাওনা হনতে আইছেন নি নিবারণ ভাই? কানা নিবারণ সে কথারও জবাব দেয় না।

বাড়ি ফিরেও নুরুদ্দিন কোনো রকম ঝামেলা করে না। নিজের মনেই থাকে। মতি মিয়া বারবার জিজ্ঞেস করে, মার লাগি পেট পুড়ে?

নাহ।

মুখ শুকনা ক্যান? নিচ্ছ পেট পুড়ে?

নাহ।

মতি মিয়ার নিজেরই খারাপ লাগে। কিছুতেই মন বসে না। নইম মাঝির বাড়ি সন্ধ্যার পর গান-বাজনার আয়োজন হয়। মতি মিয়া বোজ যায়, কিন্তু বেশিক্ষণ থাকতে পারে না। সেখানেও শুধুই যাই-যাই করে।

সন্ধ্যা কালে বাড়িত গিয়া করবাটা কী মতি ভাই?

পুলা একলা আছে।

হে তো ঘুমইতাছে। বও দেহি, হুক্কাডাত একটা টান দিয়া হারমুনিডা ধর।

 

বাড়ি ফিরে তার ভালো লাগে না। কেমন উদাস লাগে। রাতের খাওয়া শেষ হলে এক-আধ দিন রহিমার সাথে খানিক গল্পগুজব করে। রহিমা লম্বা ঘোমটা টেনে বারান্দায় বসে। কথা বলার সময় মুখ অন্য দিকে ফিরিয়ে রাখে। মতি মিয়া তার গ্রাম সম্পর্কে ভাসুর। তার মুখের দিকে তাকিয়ে কথা বলা সম্ভব নয়। রহিমার সঙ্গে কথা বলতে মতি মিয়ার খারাপ লাগে না।

নিখল সাব কেমন ডাক্ত মতি ভাই?

জব্বর ডাক্তর।

পরিষ্কার বাংলা কথা কয়?

তা কয়। গেরাইম্যা কথাও কইতে পারে?

না। বুঝতে পারে।

দুনিয়াডাত কত কিসিমের জিনিসই না আছে মতি ভাই।

কথা ঠিক। খুব খাড়ি কথা।

নিখল সাব ডাক্তরে দেখনের বড় শখ লাগে মতি ভাই।

তা এক দিন যামুনে নিয়া। দুই দিনের মামলা।

 

দেখতে দেখতে মাস পার হয়ে যায়, ঘোর বর্ষা নামে। শরিফাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায় না। এক সপ্তাহের কথা বলে চৌধুরীদের একটা নৌকা নেওয়া হয়েছিল। চৌধুরীবাড়ির কামলা এসে রোজ হম্বিতম্বি করে।

বৈশাখ মাসের শেষাশেষি। কাজকর্ম নেই। সোহাগীতে বোরা ধান ছাড়া কিছুই হয় না। ভাটি অঞ্চলগুলিতে তাই অগ্রহায়ণ না আসা পর্যন্ত অলস মন্থর দিন কাটে। মতি মিয়া উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘোরাঘুরি করে। শরিফাদের ফিরতে এতটা দেরি হওয়ার কোনো কারণ খুঁজে পায় না। বড়োই মন খারাপ লাগে তার। পাড়াপড়শিও খোঁজখবর করে।

বাচ্চা বিয়াইতে বাপের বাড়িতে গেলেও তো এক মাসের মধ্যে ফিরে, কিন্তু ইদিকে যে মাসের উপর হইল। খোঁজখবর কর মতি। গাছের মত থাইক না।

নইম মাঝি এক দিন ঠাট্টার ছলে অন্য রকম একটা ইঙ্গিত করে, মতি ভাই, আমি চিন্তা করছি আমিন ডাক্তারের সাথে নটখট কইরা দেশান্তরী হইল কিনা। পালের নৌকা তো সাথেই আছে, হা হা হা।

গা রিরি করে মতি মিয়ার। নেহায়েত বন্ধুমানুষ বলে চুপ করে থাকে। নইম মাঝি বলে, রাগ করলা নাকি, ও মতি ভাই। ঠাট্টা-মজাক বুঝ না তুমি?

না, রাগ-ফাগ করি নাই।

আর বিবেচনা কইরা দেখ, আমিন ডাক্তরের সাথে ভাবীবের খাতির-প্রণয় একটু বেশিই ছিল। হা হা হা।

হাইস না নইম, এইসব হাসি-মজাকের কথা না।

এই তো রাগ হইল। ভাবীর লগে রঙ-তামশা না করলে কার লগে মু? হাসিঠাট্টা বুঝতে পারার মত বুদ্ধিশুদ্ধি মতি মিয়ার আছে। কিন্তু শরিফা এবং আমিন ডাক্তারকে নিয়ে এই জাতীয় ঠাট্টা সে সহ্য করতে পারে না। কারণ, ব্যাপারটা পুরোপুরি ঠাট্টা নয়। আমিন ডাক্তার কাজে-অকাজে তার বাড়ি এস গলা উচিয়ে ডাকবে, দোস্তাইন, ও দোস্তাইন। চায়ের পাতা নিয়া আসলাম। জর পাতা। একটু চা খাওন দরকার। ঘরে গুড় আছে?

মতি মিয়ার অসংখ্য বার ইচ্ছা হয়েছে আমিন ডাক্তারকে ডেকে বলে দেয়, যাতে সময়ে-অসময়ে এইভাবে না আসে। কিন্তু কোনো দিন বলা হয় নি। এটা অত্যন্ত ঘোট কথা। আমিন ডাক্তারের মতো বন্ধুমানুষকে এমন একটা ছোট কথা বলা যায় না।

শরিফাদের দীর্ঘ অনুপস্থিতিতে মতি মিয়া অনেক কিছুই খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে ভাবতে চেষ্টা করে। গান-বাজনা এখন ভালো লাগে না। নিখল সাব ডাক্তারের হাসপাতালে চলে গেলে হয়। মেলা খরচান্ত ব্যাপার। আবার একটু লজ্জালজ্জাও করে। নুরুদ্দিনকে আড়ালে এক বার জিজ্ঞেস করে, ও নুরা–মারে আনতে যাইবি?

নাহ।

না কি ব্যাটা! মার লাগি পেট পুড়ে না?

নাহ।

কস কী হারামজাদা! মায়া-মুত কিছুই দেহি তর মইধ্যে নাই।

নুরুদ্দিন মুখ গোঁজ করে দাঁড়িয়ে থাকে। তাকে দেখে মনেই হয় না, মায়ের দীর্ঘ অনুপস্থিতি তাকে কিছুমাত্ৰ বিচলিত করেছে।

নুরুদ্দিন রহিমার মেয়ে অনুফার সাথে গম্ভীর মুখে সারা দিন খেলাধূলা করে। দুপুরের দিকে প্রায়ই দেখা যায় নুরুদ্দিন গাঙের পাড়ের একটি জলপাই গাছের ডালে পা ঝুলিয়ে বসে আছে। গাছের নিচে পা ছড়িয়ে বসে আছে অনুফা। দুই জনেই নিজের মনে বিড়বিড় করে কথা বলছে। মতি মিয়া বেশ কয়েক বার লক্ষ করেছে ব্যাপারটি। এক দিন নুরুদ্দিনকে ডেকে ধমকেও দিল, গাছের মধ্যে বইয়া থাক, বিষয় কী?

নুরুদিন নিরুত্তর।

দুপুরবেলা সময় খারাপ। জ্বীন-ভূতের সময়, হেই সময় গাছে বইয়া থাকনের দরকার কী?

নুরুদ্দিন চোখ পিটপিট করে। কথা বলে না।

খবরদার, আর যাইস না।

আইচ্ছা।

 

তবু নুরুদ্দিন যায়জলপাই গাছের নিচু ডালটিতে পা ঝুলিয়ে বসে আপন মনে কথা বলে। গাছের গুড়িতে বসে থাকে অনুফা। ক্ষণে ক্ষণে ফিক্‌ফিক্‌ করে সে। মতি মিয়া ঠিক করে ফেলে নুরুদ্দিনের জন্যে একটা তাবিজটাবিজের ব্যবস্থা করা দরকার। লক্ষণ ভালো নয়। রহিমার সঙ্গেও এই বিষয়ে সম্পর্ক আছে বলে মনে হয়। মতি মিয়া আড়াল থেকে শুনেছে, রহিমার সঙ্গে সে হড়বড় করে অনবরত কথা বলে। রাতের বেলা কাঁথা-বালিশ নিয়ে রহিমার সঙ্গে ঘুমাতে যায়। এতটা বাড়াবাড়ি মতি মিয়ার ভালো লাগে না।

রহিমা মেয়েটি অবশ্য খুবই কাজের। এই কয় দিনেই সে বাড়ির চেহারা পাল্টে ফেলেছে। পুবের ঘরের সামনে আগাছার যে-জঙ্গল ছিল তার চিহ্নও নেই। চার-পাঁচটা কাগজি লেবুর কলম লাগিয়েছে সারি করে। বাড়ির পেছনের রান্নার জায়গাটা দরমা দিয়ে ঘিরে দিয়েছে। ঘাটে যাওয়ার পথটায় সুন্দর করে ইট বসান। ইটগুলি যোগাড় হয়েছে কোত্থেকে কে জানে? মতি মিয়ার ইচ্ছা করে রহিমাকে এই বাড়িতেই রেখে দিতে। শরিফার ঘরের লাগোয়া একটা ছোটমধ্যে চালাঘর তুলে দিলেই হয়। শরিফা কিন্তু রাজি হবে না। কেঁদেকেটে বাড়ি মাথায় করবে। কারণ রহিমার বয়স অল্প এবং সে সুন্দরী। একটি সুন্দরী এবং অল্পবয়েসী। মেয়েকে জেনেশুনে কোনো বাড়ির বৌ নিজের বাড়িতে রাখবে না।

জ্যৈষ্ঠ মাসের মাঝামাঝি আমিন ডাক্তার নৌকা নিয়ে উপস্থিত। তাকে আর চেনার উপায় নেই। গায়ে বড় একটা কটকটে লাল রঙের কোট। কোটটির স্কুল নেমে এসছে প্রায় হাঁটু পর্যন্ত। চোখে সোনালি রঙের একটি নিকেলের চশমা। কোটটি নিখল সাব আসবার সময় দিয়েছেন। চশমাটি হাসপাতালে খুজে পাওয়া। চশমায় সব জিনিস কেমন যেন ঘঘালাটে দেখায়। কোটের সঙ্গে চশমা না থাকলে মানায় না বলেই গ্রামে ঢোকবার মুখে আমিন ডাক্তার চোখে চশমা দিয়ে নিয়েছে।

মতি মিয়া নইম মাঝির ঘরে তাস খেলছিল। খবর পেয়ে দৌড়ে এসেছে। এত রাতেও আশেপাশেরদু-এক ঘরের মেয়েছেলেরা এসে জড়ো হয়েছে। নুরুদ্দিনকাঁচা ঘুম ভেঙে অবাক হয়ে দাওয়ায় বসে আছে।

শরিফা ঘরের ভেতরে চৌকির উপর বসে ছিল। মতি মিয়াকে দেখে সে মুখ ফিরিয়ে নিল। যেন কোনো কারণে লজ্জা পাচ্ছে। মতি মিয়া অবাক হয়ে দেখল, শরিফার গোল মুখটা কেমন যেন লম্বাটে লাগছে। চুল অন্যভাবে বাঁধার জন্যই হোক, বা অন্য যে-কোনো কারণেই হোক–শরিফাকে ঠিক চেনা যাচ্ছে না। মতি মিয়া গভীর হয়ে বলল, শরীলডা বালা?

শরিফা জবাব দিল না।

কি, শরীলডা বালা?

শরিফা থেমে থেমে বলল, পাওড়া কাইট্টা বাদ দিছে।

মতি মিয়া স্তম্ভিত হয়ে গেল। সত্যি সত্যি শরিফার একটা পা নেই।

শরিফা বলল, বাঁচনের আশা আছিল না। কপালে আরো দুঃখ আছে, হেই কারণে বাঁচলাম। তোমার শইলা কেন?

মতি মিয়া চুপ করে রইল। সে তখনো শরিফার একটি পা, যা শাড়ির ফাঁক দিয়ে বের হয়ে আছে, সে দিকে তাকিয়ে আছে। সেই পাটিতে আবার লাল টুকটুক একটা নতুন স্যাণ্ডেল। শরিফা থেমে থেমে বলল, রহিমা অখনো এই বাড়িত ক্যান? তারে বিদায় দেও নাই ক্যান? যুবতী মাইয়ামানুষ নিয়া এক ঘরে থাক, কাজটা ভালো কর নাই। রহিমারে কাইল সক্কালেই বিদায় দিবা, বুঝছ?

মতি মিয়া জবাব দিল না। শরীফা চিকন সুরে বলল, আর নুরার শইলডা কেমুন খারাপ হইছে। আমি ডাক দিছি, হে আসে নাই। দৌড় দিছে রহিমার দিকে। এই সব বালা লক্ষণ না। রহিমা তার কে?

<

Humayun Ahmed ।। হুমায়ূন আহমেদ