বৈরাগে চলিলা ত্রিলোচন |
ব্রহ্মা আদি পুরন্দরে              রহাবারে যত্ন করে
নাঞি শুনে কাহার বচন ||
সতীকে লইয়া শূলে              তুলিয়া স্কন্ধের মূলে
ত্রিভূবন করেন ভ্রমণে |
কাটিতে সতীর শব                জগতের নাথ দেব
অনুমতি দিল সুদর্শনে ||
চক্রকীট কূপ ধরি                শরীরে প্রবেশ করি
গ্রন্থে গ্রন্থে কাটিতে লাগিল |
বামা চরণ নিলা                  পড়িল যে ঘাটশিলা
তার নাম রুক্মিণী হইল ||
দক্ষিণ চরণবরে                  পড়িল যে যাজপুরে
তার নাম হইল বিরজা |
দেবতা সকল মেলি              সিদ্ধপাঠ তারে বলি
সুরপতি তার করে পূজা ||
চক্রে সব্য হাত কাটে            পড়ে রাজবোলহাটে
বিশাল-লোচনী মাহেশ্বরী |
সতীর দক্ষিণ হাথ             বালিডাঙ্গায় হইল পাত
রাজেশ্বরী বলি নাম ধরি ||
তবে সদাশিব রায়                  মহা পরিশ্রম পায়
ক্ষীরগ্রামে করিলা বিশ্রাম |
তাহে পৃষ্ঠদেশ পড়ে             দেবের আনন্দ বাড়ে
যোগাদ্যা হইল তার নাম ||
তবে প্রভু ধূর্জ্জটে                 গেলেন নগর কোটে
দিবসেক রহিলা পিনাকী |
মস্তক কাটে চক্রকীট              সেই মহা সিদ্ধপীঠ
তার নাম হইল জ্বালামুখী ||
তবে ত দেবের রাজ              উত্তরিলা হিংলাজ
নাভিস্থল পড়িল তথায় |
দেব করে তন্ত্রমান                সেই মহা সিদ্ধস্থান
জপিলে পাতক নাশ পায় ||
ঈশানে ঈশান যায়               উত্তরিলা কামাখ্যায়
তথা হৈল দেবী প্রিয় স্থান |
মধ্য অঙ্গে কাটে কীট              সেই মহা সিদ্ধপীঠ
কামরূপ-কামাখ্যা তার নাম ||
তবে ত কৈলাশবাসী               উত্তরিলা বারাণসী
বক্ষঃস্থল পড়িল তাহাতে |
বিশালাক্ষী রূপ হৈল             সর্ব্বদেবে পূজা কৈল
উঠে শিব শূল করি হাতে ||
প্রভু শূল শূণ্য দেখি              স্নেহেতে সজল আঁখি
অস্থিখণ্ড পাইল শূল-আগে |
কারুণ্য-পদান্য (?) বলি          সেই অস্থি কণ্ঠে ধরি
ধ্যান করি বসিলেন যোগে ||
সিদ্ধপীঠ যত স্থান                   শঙ্কর সাধয়ে জ্ঞান
কার্যসিদ্ধ হয় জপগুণে |
শুন রে সাধক ভায়া               এই স্থানে জপ গিয়া
শ্রীকবিকঙ্কণ রস ভণে ||

Mukundaram Chakrabarti ।। মুকুন্দরাম চক্রবর্তী