শিশির কাঁদিয়া শুধু বলে ,
“ কেন মোর হেন ক্ষুদ্র প্রাণ --
শিশুটির কল্পনার মতো
জনমি অমনি অবসান ?
ঘুম - ভাঙা উষা - মেয়েটির
একটি সুখের অশ্রু হায় ,
হাসি তার ফুরাতে ফুরাতে
এ অশ্রুটি শুকাইয়া যায় ।
টুকটুকে মুখখানি নিয়ে
গোলাপ হাসিছে মুচকিয়ে ,
বকুল প্রাণের সুধা দিয়ে ,
বায়ুর মাতাল করি তুলে --
প্রজাপতি ভাবিয়া না পায়
কাহারে তাহার প্রাণ চায় ,
তুলিয়া অলস পাখা দুটি
ভ্রমিতেছে ফুল হতে ফুলে --
সেই হাসি - রাশির মাঝারে
আমি কেন থাকিতে না পাই !
যেমনি নয়ন মেলি , হায় ,
সুখের নিমেষটির প্রায় ,
অতৃপ্ত হাসিটি মুখে লয়ে
অমনি কেন গো মরে যাই । ”
শুয়ে শুয়ে অশোক - পাতায়
মুমূর্ষু শিশির বলে ,” হায় ,
কোনো সুখ ফুরায় নি যার
তার কেন জীবন ফুরায় ?”
“ আমি কেন হই নি শিশির ?”
কহে কবি নিশ্বাস ফেলিয়া ।
“ প্রভাতেই যেতেম শুকায়ে
প্রভাতেই নয়ন মেলিয়া ।
হে বিধাতা , শিশিরের মতো
গড়েছ আমার এই প্রাণ ,
শিশিরের মরণটি কেন
আমারে কর নি তবে দান ?”
<