প্রবন্ধ : নারীর মূল্য Chapter : 1 Page: 32
- Details
- Sarat Chandra Chattopadhyay ।। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
- Category: কবিতার বিষয়
- Read Time: 1 min
- Hits: 205
Captain Speke এই দেশের রাজার সম্বন্ধে একটা দিনের ঘটনা বিবৃত করিয়াছেন—“next the whole party (King and Queens) took a walk winding through the trees and picking fruit, enjoying themselves amazingly, by some unlucky chance, one of the royal wives, a most charming creature and truly one of the best of the lot plucked a fruit and offered it to the king, thinking doubtless to please him greatly, but he, like a mad man flew into a towering passion, said it was the first a woman ever had the imprudence to offer him anything and ordered the pages to seize, bind and lead her off to execution”. তাঁহার পরে স্পিক লিখিতেছেন,—“it was too much for my English blood to stand; and of course I ran imminent risk of losing my own in trying to thwart the capricious tyrant but I saved the woman’s life.” নারী লইয়া পুরুষের এই যে পুতুল-খেলা, এই যে স্বার্থপরতা, পাশব বৃত্তির এই যে একান্ত উন্মত্ততা, সে শুধু নারীজাতিকেই অপমানিত ও অবনমিত করিয়াই ক্ষান্ত হয় নাই, পুরুষ যে, সমাজকে এবং সমস্ত মাতৃভূমিকে ঐ সঙ্গে টানিয়া নামাইয়া আনিয়াছে। বিভিন্ন দেশের নজীর দিয়া দেখাইবার স্থান এ প্রবন্ধে নাই, তাই আমি শুধু কাপ্তেন স্পিকের আর একটা কথা বলিয়াই থামিব। তিনি বলিয়াছেন, আফ্রিকার এতবড় দুর্দশার বারো-আনা হেতু পুরুষের এই উচ্ছৃঙ্খলতা। তথায় সর্দারদিগের এবং ক্ষমতাসম্পন্ন লোকদিগের মৃত্যুর পরেই একটা যুদ্ধ-বিগ্রহ ওলটপালট অনিবার্য। সেখানে, কে যে কার বৈমাত্র ভাই হয়, কাহার সম্পত্তিতে কাহার যে অধিকার নাই, তাহা গায়ের জোর এবং বল্লমের ফলা ভিন্ন প্রতিপন্ন করার দ্বিতীয় পথ নাই। আরো একটা কথা। ঐ কাপ্তেন সাহেব যখন তাঁহার একজন ওয়াবিম্বি নিগ্রো ভৃত্যের মুখে শুনিলেন যে, তাহারা নরমাংস আহার করে এবং বড় ভালবাসে তখন প্রশ্ন করিয়াছিলেন, “বাপু, নরমাংস এত পাও কোথায়? নিজেদের লোক মারিয়া আহার কর কি?” সে লোকটা জবাব দিয়াছিল, “না, নিজেদের লোক মারি না, আশপাশের গাঁ হইতে কিনিয়া আনি।” “অর্থাৎ?” লোকটা বলিল, “যে সব ছেলেমেয়েদের বাপ নাই, তাহারা খাইতে না পাইয়া প্রায়ই পীড়িত হইয়া পড়ে, তখন তাহাদের জননীরা একটা ছাগল পাইলেই শিশুগুলিকে দিয়া দেয়, আমরা ঘরে আনিয়া মারিয়া খাই।” সুসভ্য দেশেও বাপ আর একটা বিবাহ করিয়া তাহার দ্বিতীয় পক্ষের শিশুগুলির তুলনায় প্রথম পক্ষের সন্তানগুলির উপরে যেমন অনেক সময়েই নির্দয় হইয়া উঠেন, এ-ক্ষেত্রে জননীরাও বোধ করি সেইরূপই হয়, তবে অসভ্য বলিয়া কিছু বাড়াবাড়ি করে এবং করাই বোধ করি স্বাভাবিক! আন্দামান দ্বীপের অসভ্যদিগের একটা প্রথা আছে, শিশুর দাঁত না-ওঠা পর্যন্ত স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে থাকে, তার পর যে যাহার পথ দেখে। পুরুষটি আর একটি স্ত্রী খোঁজে, তাহার স্ত্রীটিও তাই। সে সময়ে জননীরা প্রায়ই তাহাদের দাঁত-ওঠা শিশুটিকে কোন একটা জলাশয়ের ধারে ফেলিয়া দিয়া দ্বিতীয় সংসার করিতে যায়।