মা ফিরে যাওয়ার পর টিকলী টোপরকে চিঠি লিখল
প্রিয়তম টোপর,
পত্রে আমার অন্তরের সবটুকু ভালবাসা ও সালাম নিবে। পরে জানাই যে, এখানে আসার আগে তুমি ঢাকায় ছিলে না। তাই একটা চিঠি লিখে আমাদের কাজে মেয়ের হাতে দিয়ে এসে ছিলাম তোমাকে দেওয়ার জন্য। কিন্তু সে চিঠি দিতে গিয়ে দুর্ভাগ্যবশত তোমার বাবার সামনে পড়ে যায়। তিনি তার কাছে থেকে চিঠি নিয়ে আমার বাবার কাছে পাঠিয়ে দেন। চিঠি পড়ে মা এসেছিল। ঐ চিঠিতে কি লিখেছিলাম, তুমি এখানে এলে জানাব। এই চিঠি পেয়ে অতি শিঘ্র এসে আমার সঙ্গে দেখা করবে। আসার সময় তোমার সঙ্গে দেখা হল না বলে শুধু কান্না পেয়েছে। আল্লাহর রহমতে শারীরিক ভালো, কিন্তু মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছি। তোমাকে না দেখা পর্যন্ত যন্ত্রণার উপশম হবে না। পত্র পাওয়া মাত্র আশা চাই কিন্তু। সবশেষে আল্লাহ পাকের দরবারে তোমার সার্বিক কুশল কামনা করে শেষ করছি।
আল্লাহ হাফেজ
ইতি
তোমার প্রিয়তমা
টিকলী
চিঠি লেখা শেষ করে খামে ঠিকানা লিখতে গিয়ে চিন্তা করল, এটাও যদি ওর বাবার হাতে পড়ে, তা হলে কি হবে? হঠাৎ বান্ধবী জিনিয়ার কথা মনে পড়ল। ভাবল, ওতো আমাদের সব খবর জানে। ওর ঠিকানায় দিলে নিশ্চয় টোপরকে দিবে। এই কথা চিন্তা করে জিনিয়াকেও একটা চিঠি লিখল।
জিনিয়া,
আমার ভালবাসা নিস। আশা করি, আল্লাহর পাকের রহমতে ভালো আছিস। আমিও তাঁরই কৃপায় ভালো আছি। ভাইয়ার সঙ্গে সম্পর্ক কতদুর এগোল জানাবি। এদিকে একটা ব্যাপার ঘটে গেছে। বলছি শোন, আমার ও টোপরের সব কিছু তো তুই জানিস। ও ঢাকায় কাজী অফিসে বিয়ে করতে চেয়েছিল। আমি বলেছিলাম, রাজশাহীতে হবে। আসার সময় টোপর দেশের বাড়ি গিয়েছিল। তাই একটা চিঠিতে রাজশাহীতে আসতে লিখে আমাদের কাজের বুয়ার মেয়ের হাতে দিয়ে বলেছিলাম টোপরকে দিতে। সে চিঠিটা দিতে গিয়ে তার বাবার সামনে পড়ে যায় এবং চিঠিটা তিনি নিয়ে নেন। তারপর আমার মা বাবার কাছে পাঠিয়ে দেন। চিঠি পড়ে মা এসে আমাকে এখন বিয়ে করতে নিষেধ করে বলল, পড়াশোনা শেষ হওয়ার পর তারাই আমাদের বিয়ে দেবে। সে কথা জানাবার জন্য টোপরকে আসার কথা লিখে এই চিঠি দিলাম। ওর ঠিকানায় দিলে ওর বাবার হাতে পড়তে পারে ভেবে তোর চিঠির সঙ্গে পাঠালাম। তুই চিঠিটা ওকে অতি অবশ্যই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দিবি। বিশেষ আর কি লিখব, চিঠির উত্তর দিস, আর টোপরকে বলিস, তোর ঠিকানাতে তাকে চিঠি দেব। খবরদার, ভাইয়াকে চিঠির কথা জানাবি না। আল্লাহ পাকের কাছে তোর সর্বাঙ্গীন কুশল কামনায়
বান্ধবী টিকলী
লেখা শেষ করে দুটো চিঠি একটা খামে ভরে পোস্ট করে দিল।
দেশের বাড়ি থেকে ফিরে টোপর টিকলীর সঙ্গে যেখানে সব সময় দেখা করে, সেখানে কয়েক দিন অপেক্ষা করে তাকে আসতে না দেখে ভাবল, তা হলে কি রাজশাহী চলে গেছে। একদিন ভার্সিটি যাওয়ার সময় রাস্তার মোড়ে মুদি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে টিকলীর কথা ভাবছিল। এমন সময় আসমাকে দোকানে সদাই করে ফিরে যেতে দেখে বলল, এই আসমা শোন।
টোপরকে দেখে আসমার চিঠির কথা মনে পড়ল। ভয় পেয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইল।
টোপর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল তোর আপা কি রাজশাহী চলে গেছে।
আসমা মাথা নিচু করেই বলল, হ্যাঁ সাত আট দিন হল গেছে।
ঠিক আছে তুই যা বলে টোপর ভার্সিটিতে চলে গেল।
আসমা হাঁফ ছেড়ে বাঁচল। তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরতে লাগল।
যখন পনের দিন পার হয়ে গেল অথচ টিকলীর চিঠি পেল না তখন টোপর খুব অস্থির হয়ে পড়ল। ভাবল আর এক সপ্তাহের মধ্যে যদি চিঠি না আসে, তা হলে রাজশাহীতে গিয়ে মেডিকেল কলেজে তার সঙ্গে দেখা করবে।
বিশ দিনের মাথায় টোপর ক্লাস করে বেরিয়ে রাস্তায় এসে রিক্সায় উঠতে যাবে, এমন সময় একটা মেয়ের গলা শুনতে পেল, টোপর ভাই রিক্সায় উঠবেন না, একটু দাঁড়ান কথা আছে।
টোপর ঘাড় বাঁকিয়ে জিনিয়াকে দেখতে পেয়ে ঘুরে দাঁড়াল। সে জিনিয়াকে চিনে। টিকলী তার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল।
জিনিয়া কাছে এসে সালাম দিয়ে বলল, আপনি আচ্ছা ছেলে তো, আজ তিন চার দিন সারা ভার্সিটিতে চষে ফেলছি, তবু আপনাকে পাইনি।
টোপর বলল, তাই নাকি?
হ্যাঁ তাই।
কেন বলতো?
টিকলী রাজশাহী থেকে আমাকে চিঠি দিয়েছে। সেই সাথে আপনাকেও দিয়েছে। এই নিন বলে চিঠিটা তার হাতে দিল। তারপর বলল, আপনাদের বাসার ঠিকানায় দিলে যদি অন্য কারো হাতে পড়ে, তাই আমার ঠিাকনায় দিয়েছে।
টিকলীর চিঠির জন্য টোপর অস্থির ছিল। বলল, তোমাকে কি বলে যে ধন্যবাদ জানাব ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।
আমি এখন যাই বলে জিনিয়া চলে গেল।
টোপর চিঠি পড়ে বাসায় ফেরার সময় চিন্তা করল, তাই বাবা এই কয়েক দিন আমার সঙ্গে তেমন কথা বলেনি। চিঠির কথা এখন কিছু বলা ঠিক হবে না। রাজশাহী থেকে ফিরে যা বলার বলা যাবে। বাসায় ফিরে মাকে বলল, আমাকে হাজার পাঁচেক টাকা দিতে হবে।
শাফিয়া বেগম বলেন, তা হলে কি টিকলীর কোনো চিঠি পেয়ে রাজশাহী যাবে? জিজ্ঞেস করলেন, এখন এত টাকার কি দরকার পড়ল?
তুমি দেবে কিনা বল?
কি দরকার না বললে দেব না।
আগে তো কোনো দিন জানতে চাও নি।
এত টাকা এক সঙ্গে তুই আগে কোনো দিন চাস নি।
টোপর রেগে গিয়ে বলল, আগে দরকার হয় নি, তাই চাইনি। তুমি টাকা দেবে। কিনা বল।
শাফিয়া বেগম ছেলের জীদ জানেন। বললেন, রেগে যাচ্ছিস কেন? মা হয়ে জিজ্ঞেস করা কি উচিত নয়?
আমি কাল বন্ধুদের সঙ্গে রাঙ্গামাটি ও কক্সবাজারে বেড়াতে যাব।
শাফিয়া বেগমের সন্দেহ কেটে গেল। হাসি মুখে বললেন, সে কথা প্রথমে বললেই পারতিস। ঠিক আছে যাওয়ার সময় নিস।
টোপর বলল, তুমি বাবাকে বেড়াতে যাওয়ার কথাটা বলো।
শাফিয়া বেগম বললেন, আচ্ছা বলব।
রাতে খাওয়ার টেবিলে শাফিয়া বেগম স্বামীকে উদ্দেশ্য করে বললেন, টোপর কাল বন্ধুদের সঙ্গে কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি বেড়াতে যাবে। কিছু টাকা চাইছে।
কাহহার সাহেব কয়েক দিন পিয়নকে জিজ্ঞেস করে নিশ্চিত হয়েছেন, রাজশাহী থেকে অথবা অন্য কোথাও থেকে টোপরের নামে কোনো চিঠি আসেনি। তাই কোনো সন্দেহ না করে জিজ্ঞেস করলেন, কত দিন পরে ফিরবে?
শাফিয়া বেগম বললেন, ও তো বলল, এক সপ্তাহ।
কাহহার সাহেব বললেন, এভাবে টাকা পয়সা নষ্ট করা উচিত নয়।
বাবা যে খুব কৃপণ টোপর তা জানে। সে না দিলেও মা দেবেই। তাই চুপ করে খেয়ে যেতে লাগল।
শাফিয়া বেগম বললেন, বন্ধুদের সঙ্গে কয়েক দিন বেড়িয়ে আসবে এতে আর কি এমন খরচ হবে। তা ছাড়া এটাই তো ওদের বেড়াবার বয়স। সংসারে ঢুকলে ওসব খেয়াল কি আর থাকবে?
কাহহার সাহেব বললেন, টাকা যে উপার্জন করে, সেই বুঝে টাকা কি জিনিস।
শাফিয়া বেগম বললেন, তুমি যে এত উপার্জন করছ, কার জন্য? ছেলেমেয়েদের জন্য তো?
কাহহার সাহেবের ততক্ষণে খাওয়া শেষ হয়েছে। হাত মুখ ধুয়ে বললেন, তোমার আস্কারা পেয়ে, ও আজ এই রকম হয়েছে। কথা শেষ করে চলে গেলেন।
পরের দিন সকালে টোপর কমলাপুর স্টেশনে আটটা চল্লিশে পদ্মা এক্সপ্রেসে রওয়ানা দিল। রাত প্রায় নটার রাজশাহী পৌঁছে একটা হোটেলে রাত কাটিয়ে সকাল আটটায় টিকলীর দেওয়া ঠিকানা মতো মেডিকেল কলেজের গেটে অপেক্ষা করতে লাগল।
সাড়ে আটটায় ক্লাস শুরু হয়। টিকলী প্রতিদিন সোয়া আটটায় আসে। আজ রিক্সা থেকে নেমে টোপরকে দেখে খুব খুশি হল। এগিয়ে এস সালাম দিয়ে বলল, কেমন আছ?
টোপর সালামের উত্তর দিয়ে বলল, ভালো আর থাকতে দিলি কই, তুই কেমন আছিস?
আমি এক রকম আছি। এখানে দাঁড়িয়ে কথা বলা ঠিক হচ্ছে না। চলো কোথাও গিয়ে বসি। আজ আর ক্লাস করব না। তারপর যেতে যেতে বলল, এবার থেকে তুই করে বলবে না, তুমি করে বলবে। দেখছ না আমি তুমি করে বলছি।
কথাটা মন্দ বলিসনি। ঠিক আছে তাই হবে।
টিকলী হেসে উঠে বলল, এক্ষুণী তো বলে ফেললে।
টোপরও হেসে উঠে বলল, এত বছরের অভ্যাস বদলাতে একটু সময় লাগবে।
ওরা একটা হোটেলের কেবিনে বসল। তারপর টিকলী জিজ্ঞেস করল, কি খাবে বল?
টোপর বলল, নাস্তা খেয়ে বেরিয়েছি, শুধু চা। তুমি কিছু খেলে খেতে পার।
টিকলী বলল, আমিও তাই। তারপর বেয়ারাকে দুকাপ চায়ের অর্ডার দিয়ে বলল, আমরা কিছুক্ষণ পরে নাস্তা করব।
বেয়ারা চা দিয়ে চলে যাওয়ার পর টোপর বলল, পরশু চিঠি না পেলে দুএক দিনের মধ্যে চলে আসতাম। এবার বল, যে চিঠিটা দিয়ে এসেছিলে তাতে কি লিখেছিলে।
টিকলী সব কিছু বলে বলল, তোমার মা-বাবা তোমাকে কিছু বলেন নি?
না। তবে আমার সঙ্গে বাবা কথা বলা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে।
উনি চিঠি পেয়ে আমার বাবার কাছে ফেরৎ দেওয়ার পরের দিন মা ভাইয়াকে সাথে নিয়ে এসেছিল।
তোমাকে নিশ্চয় খুব বকাবকি করে গেছেন?
তাদেরকে দেখে আমি তাই মনে করে খুব ভয় পেয়ে ছিলাম; কিন্তু না বকাবকি না করে বুঝিয়ে বললেন, তোদের ভালবাসায় বাধা দেব না। তবে তোরা এখন বিয়ে করবি না। টোপর পাশ করে উপার্জন করুক, আর তুইও ততদিনে ডাক্তারী পাশ কর। তারপর তোদের বিয়ের ব্যবস্থা আমরাই করব।
তুমি কি বললে?
আমি আবার কি বলব? মা তো খুব ভালো কথা বলেছে।
টোপর অসন্তুষ্ট গলায় বলল, আর আমি যে বিয়ে করব বলে প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি তার কি হবে?
টোপর তুমি ভেবে দেখ, এখন বিয়ে করা কি উচিত হবে? এর পরিনামের কথা। আগে যা বলেছি, আবার এখনও তাই বলব।
টোপর রেগে গিয়ে বলল, এই কথা শোনাবার জন্য কি ডেকেছিস? আমাকে তো তুই চিনিস, যা বলি তা করেই ছাড়ি। আমি তোর কোনো কথাই শুনব না। চল, এক্ষুণি। কাজি অফিসে গিয়ে বিয়ে করে ফেলি।
টিকলী বুঝতে পারল, টোপর খুব রেগে গেছে। তাই তুই করে বলতে শুরু করেছে। বলল, তুমি রেগে যাচ্ছ কেন? মা-বাবা রাজি ছিল না বলে আমি গোপনে বিয়ে করতে রাজি হয়েছিলাম। এখন তারা যখন রাজি তখন করা কি ঠিক হবে? মা ঐ সব। বলে আমাকে ওয়াদা করিয়েছে, এখন যেন বিয়ে না করি। আমি মায়ের কাছে যা। ওয়াদা করেছি, তা খেলাপ করতে পারব না। ওয়াদা খেলাপ করা কবিরা গোনাহ। এটা হাদিসের কথা।
আর তুই যে আমাকে বলেছিলি, রাজশাহীতে গিয়ে বিয়ে হবে। সেই ওয়াদা খেলাপ করলে গোনাহ হবে না?
সেটার পিছনে কারণ ছিল। এখন কারণটা যখন নেই তখন আমাদের দুজনের মধ্যে সমঝোতা হওয়া উচিত।
উচিত অনুচিত আমি বুঝি না। আমি আজ এক্ষুণী তোকে বিয়ে করতে চাই।
তা হয় না টোপর, তুমি ভুল করতে যাচ্ছ। জেনে শুনে আমি তা করতে দিতে পারি না। আমি তোমার ভালো চাই। কতবার বলেছি এখন বিয়ে করলে তোমার উজ্জ্বল। ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ডুবে যাবে। আমাদের সুখ-শান্তির স্বপ্ন ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে যাবে।
টোপর রাগ সহ্য করতে পারল না। দাঁড়িয়ে উঠে বলল, তোর মনে যদি এই ছিল, তা হলে ডেকে এনে আশা দিয়ে নিরাশ করলি কেন? চিঠিতেই তো জানাতে পারতিস। তুই বেঈমান, তোর সাথে আমার সম্পর্ক চিরদিনের জন্য শেষ। আমাকে আর কোনো দিন চিঠি দিবি না। কথা শেষ করে কেবিন থেকে বেরিয়ে হন হন করে চলে যেতে লাগল।
টিকলী ওর পিছনে আসতে আসতে বলল, প্লীজ টোপর যেও না, দাঁড়াও। তারপর বেয়ারাকে দেখতে পেয়ে তার হাতে দশ টাকার একটা নোট দিয়ে দ্রুত হোটেল থেকে বেরিয়ে এল।
ততক্ষণে টোপর একটা রিক্সায় উঠে ঠিকানা বলল।
টিকলী তাড়াতাড়ি করে রিক্সার কাছে যখন এল তখন রিক্সা চলতে শুরু করেছে।
টিকলী রিক্সার পাশে হাঁটতে হাঁটতে বলল, টোপর তোমাকে আল্লাহর দোহাই লাগে, দাঁড়াও।
টোপরের চোখে তখন পানি এসে গেছে। চোখ মুছতে মুছতে রিক্সাওয়ালাকে বলল, জৈারে চালাও।
টিকলীকে পিছনে ফেলে রিক্সা চলে গেল।
টিকলী যতক্ষণ রিক্সা দেখা পেল ততক্ষণ সেদিকে তাকিয়ে রইল। তখন তার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়তে লাগল। তারপর অদৃশ্য হয়ে যেতে চোখ মুখ মুছে একটা খালি রিক্সা দেখতে পেয়ে উঠে বসে বাসার ঠিকানা বলল।
ভাগ্নীকে অসময়ে বাসায় ফিরতে দেখে মাজেদা বেগম জিজ্ঞেস করলেন, কিরে, , চলে এলি যে, ক্লাস হয় নি? তারপর তার মুখ থমথমে দেখে বললেন, তোর কি শরীর খারাপ?
টিকলীর শুধু কান্না পাচ্ছে। অনেক কষ্টে সংযত হয়ে বলল, ভীষণ মাথা ধরেছে, তাই চলে এলাম। তারপর তাড়াতাড়ি নিজের রুমে এসে খাটে শুয়ে ফুলে ফুলে কাঁদতে লাগল।
মাজেদা বেগম ভাগ্নীর মাথা ধরার কথা শুনে রুমে এসে তাকে কাঁদতে দেখে আতঙ্কিত স্বরে বললেন, খুব বেশি কি যন্ত্রণা হচ্ছে মা? কাউকে দিয়ে ডাক্তার আনাব?
টিকলী সামলে নিয়ে বলল, না, ডাক্তার আনতে হবে না। প্যারাসিটামল খেয়েছি। একটু পরে কমে যাবে। আপনি যান, আমি একটু ঘুমাব।
মাজেদা বেগম বললেন, তাই ঘুমা। ঘুমালে মাথার যন্ত্রণা কমে যাবে। তারপর? তিনি সেখান থেকে চলে এলেন।
<