পরদিন সকালে নাস্তা সেরে মেরিচাচীকে বাসন-পেয়ালা ধুতে সাহায্য করলো কিছুক্ষণ কিশোর। তারপর বেরিয়ে এসে ঢুকলো তার ওয়ার্কশপে। কুইজ শোর অনুষ্ঠান রেকর্ড করতে টেলিভিশন স্টেশনে যাবার কথা দুটোর সময়।

বেশির ভাগ কুইজ শোতেই, জানে সে, যার যার নিজের বিষয় পছন্দ করে নিতে বলা হয়। ওয়ার্কবেঞ্চে বসে বসে ভাবতে লাগলো সে, ওদেরকে কি সেরকম কোনো সুযোগ দেয়া হবে? যদি হয়, তাহলে কোন্ বিষয় পছন্দ করবে সে? বিজ্ঞান। ইস্কুলে তার সব চেয়ে প্রিয় বিষয়।

আগের দিন বেকারকে শো-এর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছিলো নেলি। জবাব দেয়নি, বিজ্ঞাপন ম্যানেজার। শুধু বলেছে, সারপ্রাইজ দেয়ার জন্যে সেটা গোপন রাখতে হচ্ছে, সরি।

একটা টিনের ছাউনির নিচে রয়েছে এই ওয়ার্কবেঞ্চ। বেঞ্চটার একধারে পড়ে আছে কয়েকটা পুরনো ভাঙা ক্যারো। কিনে নিয়ে এসেছিলেন রাশেদ পাশা। ওগুলোর কোনোটার লেন্স, কোনোটার শাটার আর নানারকম পার্টস খুলে নিয়ে একটা বিশেষ ধরনের ক্যারো তৈরি করার ইচ্ছে কিশোরের। খুব ছোট জিনিস। জ্যাকেটের নিচে লুকিয়ে রেখে বোতরে ফুটো দিয়ে চোখ বের করেই যেটার সাহায্যে ছবি তোলা যাবে। পুরনো যন্ত্রপাতি দিয়ে নতুন ধরনের কিছু তৈরি করে ফেলা তার হবি।

কয়েক মিনিট কাজ করার পরই হঠাৎ সোজা হয়ে মুখ তুললো সে, নামিয়ে রাখলো হাতের যন্ত্রপাতি। মাথার ওপরের লাল বাতিটা জ্বলছে-নিভছে। তারমানে ফোন বাজছে হেডকোয়ার্টারে।

দুই সুড়ঙ্গ দিয়ে ট্রেলারে ঢুকে রিসিভার তুলে নিলো সে। হ্যালো, কিশোর পাশা কলছি।

হ্যালো, রাফায়েল সাইনাস বলছি। আমি ফোন করায় আশা করি কিছু মনে করোনি।

অবাক হয়ে ভাবলো কিশোর, কিভাবে খানিক পর পরই বদলে যায় সাইনাসের কণ্ঠস্বর। কাল রাতে কথা বলার সময় পুরনো কণ্ঠ ফিরে পেয়েছিলেন, এখন আবার মনে হচ্ছে পরাজিত, বিধ্বস্ত।

মোটেই না, জবাব দিলো কিশোর। বরং খুশি হয়েছি। জানতে ইচ্ছে করছে কাপ চোরকে ধরতে পেরেছেন কিনা।

না। পুরোপুরি পারিনি এখনও। সে-ব্যাপারেই তোমার সঙ্গে কথা বলতে চাইছি। আবার পুরনো সুর খানিকটা ফিরে এলো। সাইনাসের কণ্ঠে। ফোনে এতো কথা গুছিয়ে বলা যাবে না। তুমি যদি দুপুরে একটু আগে আগে চলে আসে, তাহলে বলতে পারি।

আসবো। কটায় আসতে বলেন?

এই এগারোটা। রিসিপশন ডেস্কে আমার নাম বললেই হবে। একটু থামলেন। তোমার বন্ধুরাও আসছে?

না। একাই আসতে হবে আমাকে।

রিসিভার নামিয়ে রাখতে রাখতে খারাপই লাগলো কিশোরের, রবিন আর মুসাকে সঙ্গে নিতে পারছে না বলে। দুপুরে হলে পারতো, কিন্তু এগারোটায় নেয়া যাবে না। ওরা বাড়ি নেই। সৈকতে গেছে সাঁতার কাটতে। কিশোরকেও যেতে অনুরোধ করেছিলো। সে রাজি হয়নি। অনেক পথ সাইকেল চালিয়ে গিয়ে সাঁতার কেটে এসে ক্লান্ত হয়ে যাবে, শো-এর সময় অসুবিধে হবে।

রবিনের মাকে ফোন করলো সে। বলে দিলো, সে যথাসময়ে গাড়ি পাঠিয়ে দেবে, রবিন আর মুসাকে নিয়ে যাওয়ার জন্যে। রবিনকে যেন বলে দেন তিনি। বিশেষ কারণে তাকে আগেই চলে যেতে হচ্ছে।

তারপর অ্যালউড হোফারকে ফোন করলো। ফোন ধরলো হোফারই। বললো তিরিশ মিনিটের মধ্যেই ইয়ার্ডে পৌঁছে যাবে।

গাঢ় রঙের স্যুট, সাদা শার্ট আর সুন্দর একটা টাই পরে এসে ইয়ার্ডের গেটে দাঁড়ালো কিশোর। গাড়ি এলো।

নীরবে চললো ওরা হলিউডের দিকে। একটা কথাও বললেন না হোফার। কিন্তু টেলিভিশন নেটওয়ার্ক অফিসের বিরাট বিন্ডিংটার সামনে গাড়ি রেখে যখন কিশোরের নামার জন্যে পেছনের দরজা খুলে দিলো সে, কিশোরের মনে হলো শোফার কিছু বলতে চায়। চত্বরে চুপ করে দাঁড়ালো সে, শোনার জন্যে।

কুইজ শের শুটিং দেখিনি কখনও, হোফার বললো। অনেক দর্শক উপস্থিত থাকে ওখানে, না?

হ্যাঁ, জবাব দিলো কিশোর। অন্তত শদুয়েক লোক তো থাকবেই।

দেখাটা নিশ্চয় খুব মজার, এক পা থেকে আরেক পায়ে শরীরের ভার সরালো হোফার। দ্বিধা করে বললো, বাড়তি টিকেট কি আছে আর?

আছে। চারটে টিকেট দিয়েছে বেকার, যদি পরিবারের কাউকে আনতে চায় কিশোর, সেজন্যে। রবিন আর মুসাকে দুটো দেয়ার পরেও আরও দুটো রয়ে গেছে তার কাছে, মেরিচাচী আর রাশেদ পাশার। তারা আসেননি। একটা রে করে দিলো সে।

অনেক ধন্যবাদ, বলে খুব আগ্ৰয়ে সঙ্গে টিকেটটা নিলো হোফার। আপনার বন্ধুদেরকে আগে নিয়ে আসি, তারপর শো দেখবে।

বাড়িটায় ঢুকলো কিশোর। মুখে চিন্তার ছাপ। ক্রমেই অবাক করছে তাকে অ্যালিউড হোফার। তার বয়েসী একজন লোক একদল, প্রাক্তন শিশু শিল্পীর বকবকানি শুনে কি মজা পাবে? কি জানি, কার যে কোন জিনিস কখন ভালো লাগবে, বলা যায় না। হোফরের ডানা আপাতত মন থেকে বিদায় করলো সে।

সোজা সাইনাসের অফিসে কিশোরকে পাঠিয়ে দিলো ডেস্কের রিসিপশনিস্ট। দরজার ওপরে লেখা রয়েছে গেস্ট ডিরেক্টরস। তাকে দেখে খুশি হলেন পরিচালক। ডেস্কে তাঁর মুখোমুখি বসলো কিশোর।

কাল রাতে ভিকটর সাইমন অনেক প্রশংসা করলেন তোমার,ঝলতে শুরু করলেন সাইনাস। যদি শুধু কিশোর বলে ডাকি তোমাকে কিছু মনে করবে?

আপনার বয়েসী অনেকেই আমাকে কিশোর বলে ডাকে, মনে করবো কেন?

গুড। সাইমন বললেন গোয়েন্দা হিসেবে তুমি নাকি অসাধারণ। অনেকগুলো জটিল রহস্যের সমাধান নাকি করেছে তুমি আর তোমার দুই বন্ধু মিলে।

মাথা ঝাঁকালে কিশোর।

সেজন্যেই আমার হঠাৎ মনে হলে, থেমে গেলেন পরিচালক। ওই কাপ চুরির ব্যাপারটা জানাজানি করতে চায় না স্টুডিও কর্তৃপক্ষ, সেজন্যেই পুলিশকে জানায়নি। আবার দ্বিধা করলেন তিনি। কাল রাতেই আমি ভেবেছি, এটা তোমাদের জন্যে একটা চমৎকার রহস্য হতে পারে। যদি চোটাকে ধরে দিতে পারে ছোটখাটো একটা পুরস্কারেরও ব্যবস্থা করতে পারি হয়তো।

তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে কিশোর বললো, পুরস্কারের চেয়ে কেসের ব্যাপারেই আমরা বেশি আগ্রহী।

গুড, সাদা পাতলা চুলে আঙুল চালালেন সাইনাস। কাউকে বলে দেবে না, শুধু এই বিশ্বাসের ওপর তোমাকে আমি বলছি, কিশোর, কাপগুলো কে চুরি করেছে, আমি জানি। যদিও এটা আমার সন্দেহ, তবে খুব জোরালো সন্দেহ।

চুপকরে অপেক্ষা করতে লাগলো কিশোর।

কাল রাতে সাউন্ড স্টেজ থেকে বেরোনোর সময় দেখলাম একটা লোক দৌড়ে যাচ্ছে দরজার দিকে। আমার পায়ের শব্দে চমকে গিয়ে নিশ্চয় দৌড় দিয়েছিলো। বাইরে তখন অন্ধকার, তবু কিছু কিছু দেখা যাচ্ছিলো। দেখলাম তরুণ বয়েসী একটা লোক ছুটে যাচ্ছে স্টুডিওর গেটের দিকে।

এবারও কিছু বললো না কিশোর।

ওর চেহারা দেখতে পাইনি, সাইনাস কললেন, তবে ওর চলাফেরাটা আমার কাছে বেশ পরিচিত লাগলো। পা নাড়ে অনেকটা চার্লি চ্যাপলিনের মতো। সেই ছেলেটা, যে চ্যাপলিনের অনুকরণ করতো, পাগল সংঘের ভারিপদ।

কাপগুলো রে করে নিতে এসেছিলো ভাবছেন? প্রথম প্রশ্নটা করলো কিশোর।

মাথা ঝাঁকালেন পরিচালক। তাছাড়া আর কি? আর তো কোনো কারণ থাকতে পারে না।

আর কোনো কারণের কথা কিশোরও ভাবতে পারলো না। কিন্তু তার দৌড়ে পালানোই প্রমাণ করে না যে ভারিপদই চোর।

তা করে না, তবে সন্দেহ করতে দোষ নেই, আবার আগের কণ্ঠস্বর পুরোপুরি ফিরে পেয়েছেন পরিচালক। সোজা হয়ে গেছে কাঁধ। একটা অনধিকার চর্চা করেছি। আমি জানি, আজ শনিবার, সাউন্ড স্টেজে শুটিং হবে না। কালও বন্ধ। সোমবারের আগে খুলছে না। এটা ভেবেই দরজায় তালা লাগিয়ে দিয়ে এসেছি আমি।

পকেট থেকে একটা চাবি বের করে টেবিলের ওপর রাখলেন তিনি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ভারিপদই একাজ করেছে। আবার ফিরে যাবে স্টেজে, কাপগুলোর জন্যে। ও এখনও জানে না যে কাপগুলো যেখানে লুকিয়েছে সেখানে নেই।

ঠিক কাজই করেছেন আপনি, কিশোর বললো।

কর্তৃপক্ষ কড়া নির্দেশ দিয়ে দিয়েছে, ব্যাপারটা যাতে গোপন রাখা হয়। চাবিটা কিশোরের দিকে ঠেলে দিলেন তিনি। নাও। ভারিপদের ওপর চোখ রাখবে। হয়তো ওকে ফাঁদে ফেলার একটা বুদ্ধি বের করে ফেলতে পারবে। যা ভালো বোঝো করো। তো, এখন আমাকে তো মাপ করতে হয়। কিছু জরুরী কাজ সারার আছে।

চাবিটা নিয়ে উঠে দাঁড়ালো কিশোর।

সে বেরিয়ে আসার সময় আবার বললেন সাইনাস, ভারিপদর ওপর কড়া নজর রাখবে।

করিডরে বেরিয়ে ঘড়ি দেখলো কিশোর। শো শুরু হতে এখনও ঘন্টা দুই বাকি। লিফটে করে লবিতে নেমে এলো আবার সে। কোণের একটা সোফায় আরাম করে বসলো। রাস্তার দিকের দরজা খুলে লোক আসছে, যাচ্ছে। ঢুকে বেশির ভাগই এগিয়ে যাচ্ছে লিফটের দিকে, রিসিপশন ডেস্কের কাছে থামছে কেউ কেউ।

হঠাৎ সামনে ঢুকে দুহাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেললো কিশোর। যার ওপর চোখ রাখতে বলা হয়েছে তাকে, সে ঢুকলো। লিফটের দিকে হেঁটে চলে গেল ভারিপদ।

ভরিপদ উঠলো। বন্ধ হলো লিফটের দরজা। উঠে গিয়ে নির্দেশক বাতির দিকে তাকিয়ে রইলো কিশোর। কোন্ কোন্ তলায় থামছে লিফট, কতোক্ষণের জন্যে, বাতিই বলে দিচ্ছে পরিষ্কার।

কয়েকবার থামলো লিফট। বোঝার উপায় নেই, ভারিপদ নামলো কোন তলায়। ফিরে এসে আবার আগের জায়গায় বসলো কিশোর।

একটা কথা অবশ্য জেনেছে কিশোর, সতেরো তলায় কুইজ শো-এর শুটিং হওয়ার কথা, কিন্তু সেই তলায় থামেনি লিফট। স্টুডিওতে ঢোকেনি ভারিপদ, তারমানে এই বিল্ডিঙেই অন্য কারও সঙ্গে দেখা করতে গেছে সে। বলা যায় না, আবার ফিরে আসতে পারে লবিতে। কিশোর যেমন এসেছে।

যেখানে আছে সেখানেই বসে থাকার সিদ্ধান্ত নিলো কিশোর। বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো না। মিনিট পাচেক পরেই ফিরে এলো ভারিপদ। হেঁটে গেল তার সামনে দিয়ে। হাতে একটা খাম। বেরিয়ে গেল সে।

পিহু নিলো কিশোর। চতুরে বেরিয়ে দেখলো, একটা মোটর সাইকেলে উঠে স্টার্ট দিলো ভরিপদ। রওনা হলো ভাইন স্ট্রীট যেদিকে রয়েছে সেদিকে।

ট্যাক্সির আশায় এদিক ওদিক তাকালো কিশোর। কয়েক গজ দূরে একটা ট্যাক্সি থেকে নামছেন এক বৃদ্ধা মহিলা।

মহিলার ভাড়া মিটিয়ে দেয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করলো কিশোর, তারপর লাফ দিয়ে উঠে পড়লো পেহরে সীটে।

কোথায় যাবো? জিজ্ঞেস করলো ড্রাইভার।

সামনে ঝুঁকে আছে কিশোর, দ্রুত ভাবনা চলছে মাথায় ভারিপদ যদি স্টুডিওতে যায়ই, তাকে ওখানে অনুসরণ করে গিয়ে লাভ নেই। বরং তার আগেই গিয়ে যদি সাউড স্টেজের ভেতরে লুকিয়ে থাকতে পারে, তাহলে…

ড্রাইভারকে স্টুডিওর ঠিকানা বললো সে। মোটর সাইকেলটা এঞ্জিন খুব একটা জোরালো নয়, জোরে চালালে ওটার আগেই ভাইন স্ট্রীটে পৌঁছে যাবে ট্যাক্সি।

ঠিকই আন্দাজ করেছে সে। যাওয়ার পথে দ্বিতীয় ট্রাফিক সিগন্যালের কাছেই মোটর সাইকেলটাকে পেছনে ফেললো ট্যাক্সি। মাত্র দুই মাইল দূরে স্টুডিও, হলিউড বুলভারের পরেই।

স্টুডিওর গেটে নেমে ড্রাইভারের ভাড়া মিটিয়ে দিলো কিশোর। গার্ডকে পাস দেখাতেই পথ ছেড়ে দিলো। দ্রুত নয় নম্বর স্টেজের নির্জন বাড়িটার কাছে এসে দাঁড়ালো সে। চাবি দিয়ে তালা খুলে ভেতরে ঢুকলো।

পুরোপুরি অন্ধকার এখন বিশাল ঘরটা। সাথে টর্চ থাকলে ভালো হতো, তবে আফসোস করে নষ্ট করার মতো সময় হাতে নেই। যে কোনো মুহূর্তে এখানে পৌঁছে যেতে পারে ভারিপদ, যদি এখানেই আসার উদ্দেশ্য থাকে তার।

দরজাটা সামান্য ফাঁক করে রাখলো কিশোর, কিছুটা আলো যাতে আসতে পারে সেজন্যে। তবে খুব একটা সুবিধে হলো না। অনুমানে রান্নাঘরের দিকে এগোলো সে। বড় জোর মিটার দশেক এগিয়েছে, এই সময় দরজা বন্ধ হওয়ার আওয়াজ হলো। ফিরে তাকিয়ে দেখলো, ফাঁক বন্ধ হয়ে গেছে। কোনো আলোই আসছে না এখন। বাইরে থেকে লাগিয়ে দেয়া হয়েছে।

অন্ধকারে যতোটা দ্রুত সত্ব, দরজার কাছে ফিরে এলো কিশোর। দরজায় ঠেলা দিলো। পালা খুললো না। আরো জোরে ধাক্কা লাগলো সে। অনড় রইলো পাল্লা। বাইরে খিল লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। অন্ধকার, শব্দনিরোধক এই বাড়িতে আটকা পড়েছে সে। হাজার চিৎকার করলেও এখান থেকে বাইরে শব্দ যাবে না, সে-রকম করেই তৈরি করা হয়েছে এটা। সোমবার সকালের আগে স্টুডিওর কোনো কর্মীও ঢুকবে না এখানে।

এবং আর দেড় ঘন্টার মধ্যেই কুইজ শোর শুটিং শুরু হবে।

পুরো একটা মিনিট চুপ করে দাঁড়িয়ে ভাবলো কিশোর। দ্রুত চলহে মগজ, তবে আতঙ্কে নয়। মনে মনে পরিকল্পনা তৈরি করফেমুক্তির।

প্রথমেই দরকার, আলো।

আগের দিন বিকেলের কথা মনে পড়লো তার। আর্ক লাইটগুলো জ্বলে ওঠার পর মাস্টার কন্ট্রোলের কাছ থেকে সরে আসতে দেখা গিয়েছিলো সাইনাসকে। কিশোররা যখন কাপগুলো খুঁজে পেয়েছে।

রান্নাঘরটা কোনদিকে আহে, অনুমান করে দেয়ালের ধার ঘেঁষে সেদিকে এগুলো সে। রান্নাঘরের সেটের শেষ মাথায়ই আছে মাস্টার কন্ট্রোল। অন্ধকারে হাতড়াতে লাগলো। মনে হলো, দীর্ঘ এক যুগ পর হাতে লাগলো ধাতব সুইচ বক্সটা। হুড়কো খুলে ডালা মেললো। ভেতরে আঙুল ঢোকাতেই হাতে লাগলো সুইচ হ্যান্ডেল। ধরে নামিয়ে দিলো নিচের দিকে।

আলোয় ভেসে গেল রান্নাঘর।

এখন দুই নম্বর কাজ, টেলিফোন।

মাত্র কয়েক মিটার দূরে রয়েছে ওটা। দেয়ালে ঝোলানো। এগিয়ে গিয়ে রিসিভার নামিয়ে কানে ঠেকালো সে।

মৃত। একেবারে ডেড হয়ে আছে টেলিফোন।

<

Super User