স্যামুয়েল ব্রুকস নিজের ভাগ্যকে ধন্যবাদ জানাল তিনদিন পর মেক্সিক্যান এক বুড়ো, এমিলিও কন্টেজ ওর কূকের চাকুরিতে যোগ দেয়ায়। প্রথম দর্শনেই লোকটাকে ভাল লাগল, তারপর দুই বেলা খাবার পেটে পড়তে পুরো পছন্দ হয়ে গেল তাকে। আরও কয়েকটা কারণও অবশ্য আছে-বুড়োর কৌতূহল কম এবং হাতের কাজ শেষ করে সুযোগ পেলেই অন্য কাজেও ওকে সাহায্য করে।

এ কয়দিনে গত তিন বছরের নিঃসঙ্গতার ভয়ঙ্কর নতুন করে টের পেয়েছে ব্রুকস। পাশাপাশি থাকছে দুজন, কথা না বললেও লোকটার উপস্থিতি ওকে আনন্দ দিয়েছে। সারাদিনে খুব একটা বাক্যব্যয় না করলেও রাতে শোয়ার পর মুখে কথার খৈ ফুটতে শুরু করে মেক্সিক্যানের। রাত জেগে নিজের জীবনের অসংখ্য গল্প শোনায়। ব্রুকস মনোযোগ দিয়ে শোনে, এমিলিওর গল্প বলার ভঙ্গিটা অসাধারণ বলে কখনও একঘেয়ে লাগে না। তাছাড়া দুর্গম অঞ্চলে বুনো মোষ শিকার, ঘোড়া ধরা, প্রসপেক্টিং, টুম্বস্টোনের বিখ্যাত ফিউডের গল্প…এগুলো কার ভাল লাগবে?

পঞ্চম দিন সকালে নাস্তা সেরে কফি পান করার সময় একটা প্যাকেট এগিয়ে দিল এমিলিও। ব্রুকস দুপুরে ফিরবে না বলে খাবার দিয়েছে। কি করবে আজ?

জানতে চাইল সে, সিগারেট রোল করছে।

একটা নালা কাটব, এক স্প্রিঙের কাছে জায়গাটা শুকিয়ে গেছে। মরগান পিকসের ঝর্না থেকে পানি বইয়ে দিতে হবে।

ঝামেলার কাজ। আমি তোমাকে সাহায্য করতে পারি।

একাই পারব। তুমি বরং সময় পেলে গরুগুলোকে একটু দেখে রেখো।

শ্রাগ করল এমিলিও, এটো থালাবাসন নিয়ে বেসিনের কাছে চলে গেল।

কেবিন থেকে বেরিয়ে আসতে ওদের দেখতে পেল ব্রুকস। চারজন। মাইল খানেক দূরে আছে এখনও, দ্রুত এগিয়ে আসছে। রোয়ানের পিঠে স্যাডল চাপানোর ফাঁকে চোখ রাখল দলটার ওপর। ধীরে পরিষ্কার হয়ে আসছে কাঠামোগুলো। নিজের নিরস্ত্র অবস্থার কথা ভাবল একবার, হয়তো ওরা গোলাগুলির মধ্যে যাবে না। মুখোমুখি লড়াইয়ে নিরস্ত্র কাউকে ঠাণ্ডা মাথায় খুন করা সহজ কাজ নয়। কেবল জাত খুনী হলেই তা সম্ভব।

কাগজ ও তামাক বের করে সিগারেট রোল করল ও। এমিলিওকে ডাকল। ছোটখাট একটা ঝামেলা হতে পারে, বুড়োকে দরজায় দেখে বলল, তুমি আবার এতে নাক গলিয়ো না। হতে পারে কেবল কথা বলতেই এসেছে ওরা।

ঘোড়সওয়ারদের দিকে চকিত দৃষ্টি হানল মেক্সিক্যান, ছোট্ট করে মাথা নেড়ে ভেতরে অদৃশ্য হয়ে গেল।

একই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকল ব্রুকস। দৃষ্টিসীমায় চলে এসেছে ওরা। ডান থেকে দ্বিতীয় লোকটা বিশালদেহী, সবচেয়ে বড় ঘোড়ায় চড়েছে, বিশালবপুর তুলনায় ওটাকে তবু ছোটই লাগছে। পাশেরজনকে কোনমতেই সুঠামদেহী বলা যাবে না। অন্যজন গড়পড়তা, পশ্চিমের সাধারণ বা খেটে খাওয়া মানুষ যেমন হতে পারে। এবং সবার আগে, একটা গেল্ডিঙে চড়ে আসছে বাড পারকার, মুখের আদল তাকে চিনিয়ে দিচ্ছে।

ওদের আচরণে কোন তাড়া নেই, ধীরে এগোচ্ছে এখন। কেবল বাড পারকার আগের মতই অস্থির, দৃষ্টিতে বিষাক্ত ঘৃণা আর প্রতিহিংসা। বিশালদেহী লোকটা জেফরি করবেট, ধারণা করল ব্রুকস। সামনে এসে দাঁড়াল বার-পি ফোরম্যান, কৌতুক ও অবজ্ঞাভরা দৃষ্টিতে তাকাল। কিন্তু ওকে খুঁটিয়ে দেখার পর, চাহনিতে প্রচ্ছন্ন সতর্কতা ফুটে উঠল। কিছু একটা তাকে সাবধান করেছে বোধহয়।

কষে সিগারেটে টান দিল ব্রুকস, নিস্পৃহ দেখাচ্ছে ওকে। ইচ্ছে করলে ভেতরে এসে বসতে পারো তোমরা। এমিলিও, কফির পানি চড়িয়ে দাও। উদ্দেশ্য যাই হোক, ওরা আমার এখানে আসা প্রথম অতিথি।

শুয়োরের বাচ্চা! ঝামটে উঠল বাড পারকার। কুত্তাটা আমাদের কফি সাধছে, করবেট, সাহস দেখো! ইচ্ছে করছে ওর কপালে একটা বুলেট ঢুকিয়ে দেই!

চুপ করো, বাড! জেফরি করবেটের চাপা ধমকে নিরস্ত হলো তরুণ।

দেয়ালে হেলান দিয়ে শরীরের ভর এক পায়ে চাপাল স্যামুয়েল ব্রুকস, সিগারেটের শেষাংশ ফেলে বুটের তলায় পিষল। বোঝা গেল, কফি খাওয়ার ইচ্ছে তোমাদের নেই। করবেট, তোমার বসুকে বোলো ছেলেটাকে সামলে রাখতে। নয়তো বেশিদিন বাঁচবে না ও।

কি যেন বলতে চেয়েছিল বাড, ফোরম্যান মুখ খোেলায় থেমে গেল। একটা কথাও নয়, বাড। অনেক গোলমাল করেছ, যথেষ্ট হয়েছে। এবার আমাকে সামলাতে দাও। ব্রুকসের দিকে ফিরল সে, পকেট থেকে সিগার বের করে ধরাল। তুমি দেখছি নিরস্ত্র। হালকা সুরে বলল করবেট।

হয়তো সেজন্যেই এখনও তড়পাচ্ছে তোমার বসের ছেলেটা।

অধৈর্য ভঙ্গিতে স্যাডলে নড়েচড়ে বসল বাড।

স্যামুয়েল ব্রুকস, তীক্ষ্ণ হয়ে উঠল করবেটের দৃষ্টি। তোমাকে চব্বিশ ঘণ্টা সময় দেয়া হয়েছে। এরমধ্যেই বেসিন ছেড়ে চলে যাবে। জুলিয়াস পারকারের আদেশ এটা। চব্বিশ ঘণ্টা পর তোমাকে এখানে দেখা গেলে মুখে কিছু বলার চেয়ে বুলেট পাঠাতে পছন্দ করবে বার-পির লোকজন।

কথাগুলো যাকে উদ্দেশ্য করে বলা, হাসল সে। তোমাদের ছকেই তাহলে খেলতে হবে?

সেটা তোমার ইচ্ছে। তবে ভাল হবে যদি চলে যাও।

ব্রুকসের হাসি অম্লান। তোমাদের বস্ একটা ধাড়ি শকুন। নিজের ছেলেকে সামলে রাখার মুরোদ নেই, অথচ বিনা দোষে আমাকে উচ্ছেদ করতে চাইছে। তাকে গিয়ে বোললা আমি থাকছি।

নীরবে চেয়ে থাকল র‍্যামরড, তরুণ উসখুস করছে।

ভুল করলে, বন্ধু, জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল! পরে আর শোধরানোর সুযোগ পাবে না।

চারজন এলে কেন তোমরা? পরকারের গোয়ালে বুকের পাটাঅলা এমন কেউ নেই নাকি যে একাই চরমপত্রটা দিয়ে যেতে পারত? শ্লেষের সাথে বলল ব্রুকস, চাপা হাসি ওর মুখে।

রাগে জ্বলে উঠল করবেটের চোখজোড়া।

ওকে পিষে ফেলো, জেফ! উস্কে দিতে চাইল এক পাঞ্চার। বড় বড় কথা বলার মজা টের পাইয়ে দাও।

চোপরাও, টার্নার! কি করতে হবে তা আমি বুঝব।

বার-পি সম্পর্কে পরিষ্কার একটা ধারণা পেয়ে গেলাম, জেফরি, মৃদু স্বরে বলল ব্রুকস যেন খোশ-গল্প করছে। তোমার ওপর দেখছি আস্থা নেই ওদের। ভয় পেয়েছ?

চমকে উঠল ফোরম্যান। এটা লড়ার সময় নয়, সামলে নিয়ে বলল সে, সঙ্গীদের বিস্মিত মুখগুলো দেখল একবার।

কিন্তু কথা তো এরকম ছিল না! টার্নার নামের পাঞ্চারকে অসন্তুষ্ট দেখাচ্ছে। আমরা দেখতে এসেছি…।

চুপ করবে না দুটো থাবড়া মারতে হবে? ধমকে উঠল করবেট।

মিইয়ে গেল লোকটা, কিন্তু দৃষ্টিতে চাপা অসন্তোষ লেগে থাকল।

বাড পারকারের ঘোড়াটা হঠাৎ করে আগে বাড়ল, অন্যদের ছাড়িয়ে এগিয়ে এসেছে তরুণ। বিদ্যুৎ গতিতে কোমরে চলে গেছে ওর হাত, খোলা খাপ থেকে হেঁচড়ে মুক্ত হলো পিস্তল। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই গুলি করল। কিন্তু তাড়াহুড়োয় লক্ষ্যভ্রষ্ট হলো সেটা, ব্রুকসের হ্যাট উড়িয়ে নিয়ে গেল। ফের গুলি করার চেষ্টা করল বাড, এবার সময় নিয়ে নিশানা করে।

কেবিনের ভেতরে বোমা ফাটল যেন। একটা শার্পসের কান ফাটানো গর্জনে থমকে গেল সবাই। বাডকে দেখে মনে হলো অদৃশ্য কিছু একটার সাথে ধাক্কা খেয়েছে, স্যাডলে হেলে পড়ল। ওর পাঠানো গুলি ব্রুকসের মাথার ওপর দরজার পাল্লা ফুটো করেছে।

নড়বে না কেউ! শার্পস কক করার ভারী আওয়াজ চাপা পড়ে গেল। এমিলিওর চড়া কণ্ঠে। পিস্তলে হাত দিলেই মরবে। কাপুরুষের দল, আরেকটু হলে নিরস্ত্র একটা লোককে খুন করে ফেলেছিলে!”কফি খাওয়ার খায়েশ ওদের নেই, এবার নিশ্চয়ই বুঝেছ, সাম?

ঘটনার আকস্মিকতায় বিমূঢ় হয়ে গেছে সব কজন। স্বয়ং র‍্যামরডকেও বোকা বোকা দেখাচ্ছে। ঘুণাক্ষরেও আশা করেনি এরকম কিছু হতে পারে। অবিশ্বাস নিয়ে দেখছে স্যাডলে হেলে পড়া বাড পারকারের শরীর। বুকের বাঁ দিকে বিশাল একটা গর্ত। রক্ত গড়িয়ে ঘোড়াটার গা বেয়ে নামতে শুরু করেছে। বাডের চোখ খোলা, পিস্তলটা এখনও ধরে রেখেছে মুঠিতে।

সবার আগে জেফরি করবেটই সামলে নিল। স্থির দৃশটিতে জানালার দিকে তাকিয়ে থাকল, চাহনিতে অপরিসীম ঘৃণা উপচে পড়ছে। ধীরে ফিরল ব্রুকসের দিকে। ওই লোকটাকে এখুনি ঘোড়া ছোটাতে বলল, ব্রুকস, কোথাও যেন না থামে। জুলিয়াস পারকারের কজে ছিড়ে নিয়েছে ও। দেখামাত্র ওকে খুন করবে মি. পারকার।

একটু ভুল হলো বোধহয়, তুমি বা অন্য কেউ বরং তার হয়ে কাজটা করবে। তোমাদের মত ডালকুত্তাদের এ জন্যেই বেতন দেয় পারকার। নিজে ওসব করতে গিয়ে প্রাণ খোয়ানোর ঝুঁকি নেবে নাকি?

মরার খায়েশ হলো নাকি, করবেট? ফোরম্যান নড়ে উঠতে চেঁচাল এমিলিও। পিস্তলটা বের করো তাহলে! দেখেও যদি না শেখো তো কে শেখাবে তোমাদের?

রাগে লাল হয়ে গেল করবেটের বিশাল রোদপোড়া মুখ। অ্যামিগো, জুলিয়াস পারকারের কাছে তোমাকে খুন করার অনুমতি চাইব আমি। সেটা পেলে কাজ সারার আগে পানিও ছোঁব না!

বাছা, আমার বয়স তোমার বাপের সমান, মেক্সের চাপা হাসি শোনা গেল। এই জীবনে তোমার মত ধাড়ি ষাড় অনেক দেখেছি। ওসব ফালতু আলাপ বাদ দাও, আর আমার মেজাজ খারাপ হওয়ার আগেই লাশটা নিয়ে কেটে পড়ো। তোমাদের হোঁৎকা মুখগুলো একেবারেই সহ্য হচ্ছে না আমার!

স্পার দাবাল জেফরি করবেট, বাডের পাশে এসে দাঁড়াল। স্যাডলে উপুড় করে শোয়াল তরুণের লাশ, ঘোড়ার লাগাম হাতে তুলে নিল এরপর। এ দানটাও তোমরা জিতলে। পরেরবার কিন্তু আর এরকম হবে না। তোমাদের শান্তিতে থাকতে দেব তেমন মানুষ আমি নই। পারকারদের লেজে পা দেয়ার মজা হাড়ে হাড়ে টের পাবে। বিশ্বাস করো, একটা শব্দও বাড়িয়ে বলছি না! ঘুরে এগোল সে, পাশাপাশি এগোচ্ছে লাশবাহী ঘোড়াটা।

ভুল বলেছ, বাছা। পারকারদের লেজে পা দেইনি আমি, বরং ওদের একটা লেজ কেটে দিয়েছি। বলে ফোরম্যানের ঘোড়ার ঠিক পায়ের কাছে গুলি চালাল এমিলিও।

চমকে লাফিয়ে উঠল অবলা প্রাণীটা, পিঠ থেকে সওয়ারীকে ফেলে দেয়ার উপক্রম করেছে। আতঙ্কে উধ্বশ্বাসে ছুটতে শুরু করল এরপর। ওটাকে বাগে আনতে বেশ কসরৎ করতে হলো করবেটকে, ততক্ষণে সঙ্গীদের ছাড়িয়ে অনেকটা এগিয়ে গেছে। পেছন ফিরে অনুসরণরত পাঞ্চারদের দেখল, তারপর ধীরে এগোল যাতে অন্যরা ওকে সহজে ধরে ফেলতে পারে।

সহাস্যে কেবিন থেকে বেরিয়ে এল এমিলিও। হাতের শ্বাপস রাইফেলের গায়ে আদুরে চাপড় মারল। কেমন দেখালাম, বাছা?

ভুল করেছ।

অকৃতজ্ঞ। ঘনঘন মাথা নাড়ল মেক্সিক্যান, ব্রুকসের মন্তব্য মেনে নিতে পারছে না যেন। তোমার প্রাণ বাঁচালাম, অথচ বলছ ছোকরাকে মেরে আমি ভুল করেছি! আরে, তোমাকে ফুটো করার জন্যে গুলি করেছিল ও, তোমার সাধের হ্যাট ফুটো করার জন্যে নয়।

তো?

তোমার সৌভাগ্য যে প্রথমবার মিস করেছিল। আর দ্বিতীয়বার ওর আগেই আমি গুলি করতে পেরেছি।

একেবারে প্রাণে না মারলেও বোধহয় চলত।

এ কথা তুমিও জানেনা যে এসব হিংস্র কয়োেটদের বাড়তে দেয়া ঠিক না। প্রথম সুযোগেই বাড পারকারের মত কাপুরুষদের খুন করা উচিত। আজ ও একজন নিরস্ত্র লোককে খুন করতে যাচ্ছিল, বেঁচে থাকলে কাল পেছন থেকে কাউকে গুলি করত।

তা জানে ব্রুকস, কিন্তু স্বীকার করল না।

কেবল চব্বিশ ঘণ্টার নোটিশ দেয়ার জন্যে চারজনের আসা? ভদ্রলোকের মত আচরণ হয়ে যাচ্ছে না? যে কারণেই এসে থাকুক, ভাবছে ও, সলতেটাকে আরও উস্কে দিয়েছে এমিলিও। ক্ষমা নামের জিনিসটার সাথে পরিচয় নেই জুলিয়াস পারকারের। ছেলেকে হারিয়ে উন্মাদ হয়ে যাবে বুড়ো, বেসিন থেকে ওদের উৎখাত করার চেয়ে দুটো কবর খুঁড়তে পছন্দ করবে। আইনের ধার দিয়েও যাবে না, সবকিছুর শেষ দেখবে সে, যা করার করবে নিজ হাতে।

ফুটো হওয়া হ্যাট তুলে মাথায় চাপাল ব্রুকস। আনমনা হয়ে গেল। আর সব সাধারণ মানুষের মত বাকি জীবনটা ঝামেলা ছাড়া কাটিয়ে দিতে এখানে পাড়ি জমিয়েছিল ও, কিন্তু সে-সুযোগ এখন আর থাকল না। বাড পারকারের লাম্পট্য দিয়ে যে অশান্তির শুরু, মরে গিয়ে তা স্থায়ী করে গেছে উদ্ধত, অহঙ্কারী ছেলেটা।

 

বার-পি র‍্যাঞ্চ হাউস।

বিশাল অফিস রূমে মিলিত হয়েছে সবাই। পঁচিশজন পাঞ্চার, ফোরম্যান জেফরি করবেট, জুলিয়াস পারকার আর তার দুই ছেলে নিকোলাস ও অ্যালান। বাপের পাশে দুটো চেয়ারে বসেছে ওরা। বাথান মালিকের সামনের টেবিল আর নিজেদের মধ্যে বেশ খানিকটা দূরত্ব রেখে বেঞ্চে বসে আছে জনা বারো কাউহ্যান্ড, অন্যরা পেছনে দাঁড়িয়ে। বেঞ্চের পাশে হাতলহীন একটা চেয়ারে বসেছে জেফরি করবেট।

জুলিয়াস পারকারের বয়স সবে ষাট পেরিয়েছে। এখনও সুঠামদেহী সে, দীর্ঘ পেশীবহুল শরীরে উদ্যমের কমতি নেই। পাঞ্চারদের মতই সকাল-সন্ধ্যা টানা পরিশ্রম করতে পারে। একাধারে সে যেমন বুদ্ধিমান, কুশলী, তেমনি অহঙ্কারীও। অন্যান্য বাথান মালিকের চেয়ে একটু আলাদা-সাধারণ পাঞ্চারদের সাথে দূরত্ব বজায় রেখে চলে।

এ মুহূর্তে তাকে মোটেও শোকাতুর মনে হচ্ছে না। চারদিন আগে করবেট যখন বাডের লাশ নিয়ে বাথানে পৌঁছেছিল, একটা শব্দও উচ্চারণ করেনি বুড়ো। নিজের কামরা ছেড়ে এরপর মাত্র একবারই বেরিয়েছে, বাডের ফিউনেরালের সময়। ছেলের মৃত্যু তাকে প্রচণ্ড আঘাত দিয়েছে। তিন ছেলের মধ্যে বাডের প্রতি আলাদা টান, ছিল বার-পি মালিকের। ছেলেটাকে জন্ম দেয়ার সময় মারা যায় মিসেস পারকার। বাড মানুষ হয়েছে বাপের কাছে। বলা বাহুল্য বাপের লাই পেয়েই তার বখে যাওয়া। বাপ ছাড়া আর কাউকে যদি পাত্তা দিত তো সে হচেছ ফোরম্যান জেফরি করবেট। কৈশোর পেরোনোর আগে থেকেই করবেটের পেছনে ছায়ার মত লেগে থাকায় অভ্যস্ত হয়ে যায় সে।

শান্ত কিন্তু দৃঢ় স্বরে নীরবতা ভাঙল বার-পি মালিক। বাড়কে অকালে হারিয়েছি আমি। ওই লোকগুলোকে হটানো ছাড়া অন্য কিছু আমার মাথায় নেই। কাজটা সহজ হবে না, কারণ ওরা কঠিন লোক। হয়তো শেষপর্যন্ত এটা দুটো আউটফিটের লড়াই হয়ে দাঁড়াবে। যারা অস্ত্র চালাতে জানো এবং বাডের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে চাও, তাদেরকে ছাড়া অন্যদের প্রয়োজন নেই আমার। কেউ যদি থাকতে না চায়, সে চলে যেতে পারে। এখুনি পাওনা বুঝিয়ে দেব আমি। ড্রয়ার খুলে নোটের বান্ডিল বের করল পারকার, জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাল পাঞ্চারদের দিকে।

বুড়ো এক কাউহ্যান্ড উঠে দাঁড়াল। মি. পারকার, আমার বয়স হয়েছে। তাছাড়া অস্ত্রও চালাতে পারি না তেমন। আমি চলে যেতে চাই।

লেজার, ফোরম্যানের উদ্দেশে হাঁক ছাড়ল বাথান মালিক।

কামরার একপাশে ডেস্কের ওপর কাগজপত্র রাখা। পুরু একটা খাতা সেখান থেকে তুলে নিল করবেট। পাতা উল্টিয়ে রাখল বসের সামনে। পাঞ্চারের পাওনা মিটিয়ে দিতে বেরিয়ে গেল সে।

আর কেউ?

শেষপর্যন্ত থাকল কেবল আটজন। শেষ লোকটা বিদায় নিতে হাত তুলল ফোরম্যান।

তুমিও চলে যেতে চাও নাকি? উপহাস জুলিয়াস পারকারের কণ্ঠে।

ক্ষণিকের জন্যে বিচলিত দেখাল র‍্যামরডকে। ওদের বিদায় না করলে কি চলত না, বস? সামলে নিয়ে বলল সে। নতুন লোক আসা পর্যন্ত সবকিছু সামলাতে ঝামেলা হবে।

এটা ওদের লড়াই নয়। কাউকে বাধ্য করতে পারি না আমি।

নীরবতা নেমে এল। একে একে সবার ওপর নজর বুলাল পারকার, শেষে স্থির হলো করবেটের ওপর। তোমার কি বলার আছে, জেফ? ঠিক যা যা ঘটেছে তা-ই শুনতে চাই।

মরগান আর টার্নারসহ চারজন গিয়েছিলাম আমরা। কথা ছিল ওকে আচ্ছামত ধোলাই দিয়ে কেটে পড়তে বলব। কিন্তু. থেমে ঢোক গিলল সে।

আমিই পিছিয়ে গেলাম।

তুমি!? মাত্র একটা শব্দে বিস্ময় প্রকাশ করল পারকার। অন্যদের চোখ ছানাবড়া, কথাটা হজম করতে সময় লাগছে। হাতাহাতিতে অজেয় জেফরি করবেট লড়ার আগেই পিছিয়ে গেছে এটা ওদের কাছে কোনক্রমেই বিশ্বাসযোগ্য নয়।

হ্যাঁ, আমি। কেন জানতে পারি? বুড়োর কণ্ঠে শ্লেষ।

আমি ওকে চিনতে পেরেছি। সাধারণ কেউ নয় ব্রুকস। মিসৌরীর একটা সেলুনে একবার লড়তে দেখেছিলাম ওকে। আমার চেয়েও দশাসই এক লোক টিকতেই পারেনি। লোকজন বলছিল ওর নাম বব ম্যালোন, আমার সন্দেহ ভুয়া নামে পরিচয় দিয়েছিল ও।…তবু সেদিন আমি লড়তে পারতাম, কিন্তু তাতে…

তারপর?

প্রথম থেকেই মুখিয়ে ছিল বাড। খেপে গিয়ে পিস্তল বের করল ও। দরজার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল ব্রুকস, নিরস্ত্র। তাড়াহুড়োয় মিস করল বাড। দ্বিতীয়বার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তার আগেই কেবিনের ভেতর থেকে ওকে গুলি করে মেক্সিক্যান লোকটা। আমরা জানতাম না ভেতরে সশস্ত্র কেউ আছে।

তিনজন দাঁড়িয়ে থেকে মজা দেখলে?

আমাদের কিছুই করার ছিল না, বস্। মেক্সিক্যানটাকে দেখতে পাচ্ছিলাম, ওদিকে নিজেরা দাঁড়িয়ে আছি ভোলা জায়গায়। বাডের মৃত্যুর ধাক্কা সামলাতে আমাদের সময় লেগেছে। কিছু করতে গেলে কচুকাটা হয়ে যেতাম।

অকম্মার ধাড়ি, কাপুরুষের দল! অধৈর্য দেখাল বুড়োকে, রাগে লাল হয়ে গেছে ফর্সা মুখ, চোখে অগ্নিদৃষ্টি। উল্টোদিকের লোকগুলো ভয়ে সিটিয়ে গেল, বিশেষ করে মরগান, টার্নার আর ফোরম্যান।

অনেকক্ষণ পর শান্ত হলো বার-পি মালিক। লোকটা কে যাকে এত ভয় পেলে?

সঠিক বলতে পারব না, বস, কিছুটা দ্বিধান্বিত দেখাল ফোরম্যানকে। মিসৌরীর লড়াই শেষে এক বুড়ো হলফ করে বলছিল ওর নাম হারডিন, বব ম্যালোন নয়।

ওয়েসলি হারডিন? ধীরে প্রশ্নটা করল পারকার, ভুরু কুঁচকে উঠেছে।

নড করল করবেট।

ফিসফিস করছে পাঞ্চাররা। ওদিকে চিন্তিত দেখাচ্ছে জুলিয়াস পারকারকে।

বাবা, আমি বলি কি, নিচু কণ্ঠে আলোচনায় যোগ দিল নিকোলাস। লোকটাকে বোধহয় না ঘটানোই ভাল হবে। বাড সেধে ঝামেলা বাধিয়েছে ওর সাথে। লরিয়াকে উত্ত্যক্ত করার কি দরকার ছিল? ওটা দিয়েই তো শুরু। আর শেষ করেছে আগে পিস্তল বের করে।

পারকার এমনভাবে ছেলের দিকে তাকাল যেন সে নর্দমার একটা কীট বিশেষ। সিটিয়ে গেল নিকোলাস, ঢোক গিলল অজান্তেই।

তুমি বাডকে পছন্দ করতে না বলে এ কথা বলছ,মৃদু স্বরে অভিযোগ করল বুড়ো। এবং লরিয়া ফ্ল্যাগানকে তুমিও চাও, তাই না?

স্বীকার করছি। কিন্তু আমি একাই নই, বেসিনের বেশিরভাগ লোক ওর উদ্ধত আচরণ পছন্দ করত না।

শাট আপ, নিক! মরা ভাই সম্পর্কে এ কথা বলতে তোমার এতটুকু বাধল না?

চুপ করে থাকল নিকোলাস, মাথা নিচু করে টেবিলের দিকে তাকিয়ে আছে।

বাবা, প্রসঙ্গটা বোধহয় আমাদের বাদ দেয়াই উচিত, মৃদু কেশে বলল অ্যালোন। বাড কেমন ছিল, ওকে কেউ পছন্দ করত বা না করত তাতে কিছু যাবে-আসবে না এখন। আমাদের বরং চিন্তা করা উচিত কি করে লোকগুলোকে শিক্ষা দেয়া যায়। যে দুঃসাহস ওরা দেখিয়েছে তার বিনিময়ে চড়া মাসুল দিতে বাধ্য করতে হবে ওদের। বেসিনে বার-পির প্রভাব এখন হুমকির মুখে। ছোট্ট একটা আউটফিট যদি বার-পিকে আঘাত করতে পারে তাহলে অন্যদেরও সাহস বেড়ে যাবে। যেভাবে হোক প্রথম সুযোগেই ওদের শায়েস্তা করতে হবে।

তোমরা কি ভাবছ?

আইনের সাহায্য নেয়া যেতে পারে, বাতলে দিল নিকোলাস, মার্শাল যদি ওদের নামে হুলিয়া…।

ধোপে টিকবে না, বাধা দিল পারকার… ব্রুকসের বাথানে ঘুরে এসেছে হবস। বাডের লাশ আর পিস্তলও পরীক্ষা করেছে। সবাই জানে নিরস্ত্র থাকে ব্রুকস, ওকে ফাঁসানোর চেষ্টা করলে উল্টো বাডের ঘাড়েই দোষ পড়বে। মেক্সিক্যান লোকটাকে অভিযুক্ত করেও সুবিধে করা যাবে না, কারণ বাড দুটো গুলি করেছিল যার একটা লেগেছে দরজার পাল্লায়। জুরীদের জেরার মুখে টার্নার বা মরগান একটা মিনিটও টিকবে না। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, ওরা বার-পির লোক এবং ঘটনাস্থল হচ্ছে ব্রুকসের বাথান যেখানে ওরা চারজন আগ বাড়িয়ে গেছে।

ওসব আইনের ঝামেলায় আমি নেই। জ্যাক হবস কিছু করতে পারবে না, শহরের বাইরে, ওর ক্ষমতা খুব সীমিত। যা করার আমরাই করব। দৃঢ় স্বরে নিজের সিদ্ধান্ত জানাল পারকার।

কিন্তু ওদের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়াতে বললে এখানকার কজন রাজি হবে তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। মনে করিয়ে দিল নিকোলাস।

সামনাসামনি হওয়ার দরকার কি? বিরক্তি জুলিয়াস পারকারের গলায়। দূর থেকে একটা বুলেট পাঠিয়ে দিলেই তো ল্যাঠা চুকে যায়! একটা মানুষকে মারতে কটা বুলেট লাগে? দল বেঁধে হামলা করা যেতে পারে, কজনকে আর সামলাবে! মওকা মত পেলে কাজ হাসিল করতে কোন অসুবিধে হবে না।

চুপ করে আছে সবাই। ওরা জানে ব্যাপারটা মোটেও এত সহজ নয়। এখানে বসে হাতি-ঘোড়া মারা মুহুর্তের ব্যাপার মাত্র, কিন্তু বাস্তবে দল বেঁধে হলেও একজন ফাস্টগানের মুখোমুখি হতে সেরকম বুকের পাটা লাগে। কয়েকজন মিলে চেপে ধরলেও ওরকম একটা লোক মরার আগে দুএকজনকে সাথে নিয়েই মরবে। ভয়ঙ্কর ব্যাপার হচ্ছে সে যদি সত্যি হারডিন হয়ে থাকে সাধারণ পাঞ্চারদের কয়েকজনের দলও ওকে ঠেকাতে পারবে না। বহুবার একাধিক লোকের বিরুদ্ধে শো-ডাউন হয়েছে এ গানম্যানের।

বন্দুকবাজ ভাড়া করতে পারি আমরা, প্রস্তাব দিল অ্যালান। টাকা দিলে আমাদের হয়ে নির্দ্বিধায় কাজটা করে দেবে ওরা। হারডিনের সমকক্ষ অনেকেই আছে।

তোমরা বসে থেকে আঙুল চুষবে?

আমরাও ওকে মওকামত পাওয়ার চেষ্টা করব। তবে দলের মধ্যে কয়েকজন টাফ লোক থাকলে সবার মনোবল বেড়ে যাবে। তোমার পাঞ্চাররা এমনিতে ওদের সামনে দাড়ানোর সাহস করবে না, বাবা, এটা আমি হলফ করে বলতে পারি। অন্তত এখন, ব্রুকসের পরিচয় জানার পর। সাফল্যের সম্ভাবনা না থাকলে কেউ লড়াই করে না, জেফরি নিজে তা প্রমাণ করেছে।

অস্বস্তিতে নড়েচড়ে বসল ফোরম্যান।

মুখ দেখে মনে হচ্ছে অ্যালানের প্রস্তাব মনে ধরেছে বুড়োর। সবচেয়ে ভাল সমাধান এটাই, ভাবছে পারকার, কিছু টাকা হয়তো বেরিয়ে যাবে কিন্তু সেটা বাডের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেয়ার চেয়ে বড় কিছু নয়। তাছাড়া উপরি হিসেবে স্যামুয়েল ব্রুকসের জমিটা তো আছেই। প্রয়োজনে উকিলকে দিয়ে ভুয়া কাগজ তৈরি করে নিলেই হবে।

জেফ? ফোরম্যানের উদ্দেশে হাঁক ছাড়ল পারকার।

করবেটের পিঠ সোজা হলো।

টাকসনের উদ্দেশে এক্ষুণি রওনা দেবে তুমি। অ্যাবিলিন বা সনোরায়ও যেতে পারো। টাফ কিছু লোক চাই আমার। এমন লোক যারা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে আমার নির্দেশ। টাকার জন্যে চিন্তা কোরো না, ওরা যা চাইবে আবার তাতেও রাজি হয়ে যেয়ো না। ওখানে গিয়ে তাড়াহুড়ো করার দরকার নেই। দরকার হলে কয়েকটা দিন থাকবে, বুঝে-শুনে লোক নেবে। ভাল হয় যদি সবখানে খবর ছড়িয়ে দিতে পারো যে সত্যিকার কঠিন কিছু লোক আমার দরকার এবং এ জন্যে উপযুক্ত পারিশ্রমিকও দেয়া হবে। একবার প্রচার করে দিতে পারলে চারপাশ থেকে ছুটে আসতে শুরু করবে ওরা। ওদের মধ্যে থেকে বাছাই করে লোক নেব। এই সুযোগে, ঝামেলাটা শেষ হলে অন্যদেরও একটু শিক্ষা দেয়া যাবে। কয়েকজনকে খোঁচা দিয়ে মনে করিয়ে দেয়া দরকার পারকাররাই বেসিনে শাসন করবে, তারা যা বলবে তা-ই ঘটবে এখানে।

গ্যারেটরা দুভাই হারডিনের ওপর খুব খেপা। অনেকদিন ধরে খুঁজছে ওকে। হারডিনকে খুন করতে এক পায়ে খাড়া হয়ে আছে, কেবল খবর পেলেই হলো, টাকার কথা চিন্তাও করবে না।

কেন?

শুনেছি ওদের ছোট ভাইকে খুন করেছে হারডিন। ফ্রিসকোর একটা সেলুনে সংবাদ পাঠালে যেখানেই থাকুক খবর পেয়ে চলে আসবে ওরা।

ওদের দুজন ছাড়াও অন্তত আরও একডজন লোক চাই আমি।

বাবা, শেষে ঝামেলায় পড়বে না তো? নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা করল নিকোলাস। কাউন্টি শেরিফ বা ইউ এস মার্শালের কানে গেলে…

তুমি আজীবন কাপুরুষই রয়ে গেলে, নিক! কিছু করার আগেই খারাপ দিকটা তোমার মাথায় আসে। চাপা স্বরে খেদ প্রকাশ করল পারকার। খেই ধরার সময় নরম হয়ে এল তার কণ্ঠ। ওদের করার আছেটা কি, সান? এটা একটা রেঞ্জ ওঅর, দুটো আউটফিট লড়বে। দেখে যাওয়া ছাড়া কিছুই করতে পারবে না। বড়জোর কোন সমঝোতার জন্যে আমাকে অনুরোধ করতে পারে, তা-ও যদি খবরটা কানে যাওয়ার পর এতদূর আসতে পারে এবং ততদিন পর্যন্ত যদি স্যামুয়েল ব্রুকস টিকে থাকতে পারে। জ্যাক হবসের কথাই ধরো, শহরের বাইরে ফুটো পয়সার দাম নেই ওর। বাথানগুলোর ব্যাপারে যাতে নাক গলাতে না পারে প্রথম থেকেই ওভাবে নিয়ম করা হয়েছে।

তাছাড়া অভিযোগ করবে কে? প্রথম সুযোগেই ওদের কচুকাটা করে ফেলব আমরা। মোটে তো দুজন! টানা অনেকক্ষণ কথা বলায় হাঁপিয়ে উঠেছে জুলিয়াস পারকার, কিন্তু উৎফুল্ল দেখাচ্ছে তাকে। হাসল বাগান মালিক, ছেলে মারা যাওয়ার পর এই প্রথম। কিন্তু সেটা চোখ স্পর্শ করল না। চোখে কেবলই প্রতিহিংসার আগুন।

<

Super User