ফরহাদ উদ্দিনের অফিস ক্যান্টিনে সালু মামা বসে আছেন।

আজ তাকে খুব বিরক্ত মনে হচ্ছে। ক্যান্টিনে চিকেন কর্ন স্যুপের অর্ডার দিয়েছিলেন। স্যুপ আজ তৈরি হয় নি। সপ্তাহের সব দিন না-কি হয় না। রবিবার এবং বৃহস্পতিবার এই দুদিন হয়। এ ধরনের কথা শুনলে মেজাজ খারাপ হবার কথা। সালু মামা থমথমে গলায় বললেন, তোদের ক্যান্টিন ম্যানেজারকে তো চাবকানো উচিত। সপ্তাহে দুদিন স্যুপ হবে এটা কোন নিয়মে? এই দুদিন ছাড়া স্যুপ খাওয়া নিষেধ এরকম আইন কি জাতীয় পরিষদে পাশ হয়েছে?

ফরহাদ উদ্দিন বললেন, মামা অন্য কিছু খান।

আমি কিছু খাই বা না খাই সেটা অন্য ব্যাপার। সপ্তাহে দুদিন স্যুপ কোন আইনে হবে এটা আমাকে বুঝিয়ে বল। এই দুদিনের বিশেষত্ব কী?

ভেজিটেবল প্যাকোরা দিতে বলি মামা?

আরে না।

সালু মামা সিগারেট ধরালেন। ফরহাদ উদ্দিন মামার মেজাজ ঠিক হবার জন্যে অপেক্ষা করতে লাগলেন। মামার কাণ্ডকারখানা দেখে তাঁর খুবই মজা লাগছে।

ফরহাদ।

জ্বি।

এই কাগজটা রেখে দে, পরে দিতে ভুলে যাব।

 কীসের কাগজ?

কনকের মা’র ঠিকানা চেয়েছিলি—ঠিকানা লেখা আছে। সিডনিতে থাকে, ব্লাকটাউন সিডনি।

ফরহাদ উদ্দিন হতভম্ব গলায় বললেন, সত্যি জোগাড় করে ফেলেছ?

ভাগ্নের বিস্মিত মুখের দিকে তাকিয়ে সালু মামার বিরক্ত ভাবটা অনেকখানি কাটল। তিনি হাসি মুখে বললেন, তোকে কী বলেছিলাম, ঠিকানা জোগাড় করা আমার কাছে সাত ধারার মামলা। কোর্টে নেবার আগেই খালাস।

ঠিকানা যে তুমি সত্যি যোগাড় করে ফেলবে আমি ভাবি নি। মামা, তুমি চিকেন কাটলেট একটা খেয়ে দেখ। এরা চিকেন কাটলেট ভালো বানায়।

দিতে বল। আর ভেজিটেবল প্যাকোরা না কী যেন বললি ঐটাও এক প্লেট অর্ডার দে।

সালু মামা হাতের সিগারেট ফেলে ফরহাদ উদ্দিনের দিকে ঝুঁকে এলেন। গলা নামিয়ে বললেন—সঞ্জুর ব্যাপারটাও এখন আমি সাত ধারার মামলা বানিয়ে ফেলেছি। পুলিশ ফাইনাল রিপোর্টে সঞ্জুর নাম দিলেও কিছু করতে পারবে না। মন দিয়ে শোন কী করেছি—ঘটনাটা ঘটেছে আটই জুলাই।

কোন ঘটনা?

সঞ্জু টেলিফোনে সানসাইন ভিডিওর মালিক হাসনাতকে ঐ দিন বাড়ি থেকে বের করে নিল।

ফরহাদ উদ্দিন হাসিমুখে বললেন, সঞ্জু ঐ ঘটনার সঙ্গে নেই। এটা সঞ্জু বলেছে। ইস্তিয়াকের সঙ্গে কথা হয়েছে। সেও বলেছে পুলিশ ভুল করেছে।

সালু মামা অবাক হয়ে বললেন, ইস্তিয়াক এই কথা বলেছে?

হা বলেছে। তবে এটাও বলেছে যে পুলিশ ভুল করলেও আমাদের কাজ কর্ম চালিয়ে যেতে হবে। কারণ পুলিশ সহজে ভুল স্বীকার করবে না। তোমার পরিকল্পনা মতো কাজ করতে বলেছে। তোমার পরিকল্পনাটা কী?

সেটাই তো বলার চেষ্টা করছি। তুই তো কথাই শুনছিস না। মুখ ভর্তি হাসি। হাসির এখনো কিছু হয় নি।

তুমি বলো আমি শুনছি।

যেদিন হাসনাতকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়, ঐদিন অর্থাৎ আটই জুলাই ছিল সঞ্জুর বিয়ের দিন। ঐ দিন তার বিয়ে হয়। মিরপুরের উৎসব কমিউনিটি সেন্টারে।

মামা, আটই জুলাই তো পার হয়ে গেছে। ঐ দিন তো সঞ্জুর বিয়ে হয় নি। ও চাঁদপুরে না কোথায় যেন তার বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। আমি তো কিছু বুঝতে পারছি না।

কথার মাঝখানে এত কথা বললে বুঝবি কী করে? শুনে যা, পরে ব্যাখ্যা করব। আটই জুলাই ছিল সঞ্জুর বিয়ে। ঐ রাতেই তুনা নিশিথিনী এক্সপ্রেসে করে স্বামী স্ত্রী দুজন চলে যায় চিটাগাং। সেখান থেকে যায় কক্সবাজার। তারা দুরাত ছিল কক্সবাজারে। সমস্ত ডকুমেন্টস থাকবে আমাদের হাতে। আমরা বলব যে ছেলের বিয়ে হয় আট তারিখে, যে এগারো তারিখ পর্যন্ত ঢাকার বাইরে সে কি ঢাকায় কোনো লোককে খুন করতে পারে? তুই বল পারে?

না।

এই তো পথে আসছিস। তুর্না নিশিথিনী ট্রেনের ফার্স্টক্লাস এসি কামরার দু’টা ব্যাক ডেটের টিকিট জোগাড় হয়েছে। সঞ্জুর নামে টিকিট ইস্যু হয়েছে।

ও।

চিটাগাং-এ যে হোটেলে ছিল সেই হোটেলে ব্যাক ডেটে বুকিং স্লিপ হয়েছে। কক্সবাজারে হয়েছে। মিরপুরের উৎসব কমিউনিটি সেন্টারে ব্যাক ডেটে বুকিং স্লিপ আছে।

ও।

বাকি আছে শুধু ম্যারেজ রেজিস্ট্রারের কাবিননামা। একটু ঝামেলা হচ্ছে—তবে সন্ধ্যা নাগাদ খবর পেয়ে যাব যে এটাও কমপ্লিট। এইসব কাজ আমি খুব অল্প পয়সায় সেরেছি। মাত্র সাড়ে তের হাজার খরচ হয়েছে। কাজি অফিসের কাবিননামাটায় বেশি লাগবে। মিনিমাম দশ হাজার ধরে রাখ।

মিথ্যা বিয়ে?

মিথ্যা হবে কেন? সত্যি সত্যি বিয়ে। কনক মেয়েটার সঙ্গে বিয়ে। একটু ব্যাক ডেটে হচ্ছে। সেটা কারোর জানার তো দরকার নেই। আমির কাজি অফিসে নিয়ে বিয়ে দিয়ে দেব। তারিখটা বসানো হবে পিছনের। ক্লিয়ার?

সঞ্জু রাজি হবে না।

রাজি হবে না কেন?

কনক মেয়েটাকে সে পছন্দ করে না।

সালু মামা থমথমে গলায় বললেন, ফাঁসির দড়ি থেকে বাঁচার জন্যে আমি যদি পথ থেকে একটা নেড়ি কুত্তি ধরে এনে শাড়ি পরিয়ে নিয়ে গিয়ে বলি সঞ্জু একে বিয়ে করতে হবে, সঞ্জু সোনামুখ করে বলবে—কবুল কবুল কবুল।

 চিকেন কাটলেট এবং ভেজিটেবল প্যাকোরা চলে এসেছে। সালু মামা চিকেন কাটলেটে একটা কামড় দিয়ে বললেন—জিনিস খারাপ না। ঝাল একটু বেশি, কিন্তু ঝালটার প্রয়োজন ছিল। তুই কিছু খাবি না?

না।

পাথরের মতো মুখ বানিয়ে ফেলেছিস কী জন্যে? তুই কি ভেবেছিস সঞ্জুর সঙ্গে কথা না বলে আমি এগিয়েছি? ওর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে।

সঞ্জু রাজি?

অবশ্যই রাজি। আমি ইস্তিয়াক সাহেবের সঙ্গে এই প্ল্যান নিয়ে কথা বলেছি। উনি আমার প্ল্যানে মুগ্ধ। তবে তিনি বলেছেন এই মুহূর্তে যেন মকবুল হোসেন কিছু না জানেন। আমরা পুরো ব্যাপারটা পুরোপুরি গুছিয়ে রাখব। খেলার জন্যে যে সব তাস দরকার সব হাতে থাকবে। প্রয়োজন হলে শেষ মুহূর্তে মকবুল হোসেনকে আমাদের তাস দেখাব। ব্যাটার চোখ শুধু যে কপালে উঠবে তা-না, মাথার তালুতে উঠে যাবে। এখন বল আমার বুদ্ধি কেমন?

মামা তোমার বুদ্ধি ভালো।

সালু মামা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে বললেন, বুদ্ধি শুধু ভালো বললে বুদ্ধির অপমান করা হয়। আমার অতিরিক্ত বুদ্ধি। অতিরিক্ত বুদ্ধির কারণে নিজের জন্যে কিছু করতে পারলাম না। তুই এক কাজ কর, অফিস থেকে ছুটি নিয়ে নে। আজ আমার সঙ্গে থাকবি।

কেন?

অনেক কাজ বাকি আছে। ব্যাক ডেটে বিয়ের কার্ড ছাপতে দেব। এই কার্ড বিলি করবার দরকার নেই—কিছু স্যাম্পল থাকবে। কাজির অফিসে যাব। আমার যে বন্ধু কাজি অফিসের ব্যাপারটা দেখছে তার বাসায় রাতে আমার দাওয়াত। তুইও থাকবি। মামার সঙ্গে ঘুরবি, কোনো সমস্যা আছে?

না।

 আমার ঐ বন্ধুর আবার সামান্য মদ্য পানের অভ্যাস আছে ওর জন্যে দু’টা ব্ল্যাক লেভেল কিনতে হবে। আমার দিক থেকে উপহার। এত বড় একটা কাজ করে দিচ্ছে। বুঝতেই পারছিস। বুঝতে পারছিস না?

ফরহাদ উদ্দিন ক্ষীণ স্বরে বললেন, পারছি।

সঞ্জুকে নিয়ে ভাবিস না। বেলাইনে চলে যাওয়া ছেলেপুলেকে লাইনে তুলতে হয় বিয়ে দিয়ে। এক দেড় বছর স্ত্রীর সঙ্গে লটর-পটর করতে করতেই পার হয়ে যায়। তারপর সংসারে ছেলে-মেয়ে চলে আসে, তখন আর যাবে কোথায়? ঠিক বলেছি কি-না বল।

হুঁ।

টাকার ব্যবস্থা করেছিস?

কী টাকা?

লাখ দুই টাকা লাগবে বলেছিলাম না? মকবুলকে আজ কালের ভিতর দিয়ে দিতে হবে। আমি যে প্যাঁচ খেলেছি তাতে অল্পের ওপর দিয়ে যাবে। মকবুলের ডিমান্ড ছিল ফাইভ।

 চিমশা মেরে থাকিব না তো। বি হ্যাপী। কনক মেয়েটাকেও তো বিয়েতে রাজি করাতে হবে। তুই করবি না আমি করব?

ফরহাদ উদ্দিন জবাব দিলেন না।

সালু মামা বললেন, তুই বল? তুই বললেই হবে। এখন যা বাসায়। একটা টেলিফোন কর, তারপর চল বের হই।

বাসায় টেলিফোন করব কেন?

 ফিরতে দেরি হবে এটা জানিয়ে দে। নয়তো দুশ্চিন্তা করবে।

ফিরতে দেরি হবে কেন?

আরে এতক্ষণ কী বললাম–নানান কাজ কর্ম আছে। রাতে বন্ধুর বাসায় যাব। সেখানে রাত হবে। যা, চট করে টেলিফোনটা করে আয়; আমি আরেক কাপ চা খাই। আজকের চা-টা ঐ দিনের মতো হয় নাই।

ফরহাদ উদ্দিন টেলিফোন করার জন্যে নিজের ঘরে ঢুকলেন। টেলিফোন ধরল কনক। মেয়েটার গলার স্বর টেলিফোনে এত মিষ্টি শুনাচ্ছে।

কেমন আছ গো মা?

চাচাজি আমি ভালো আছি।

কলেজে যাও নি?

কলেজ তো এখন বন্ধ। সামারের ছুটি। আপনাকে আগে বলেছি।

মনে থাকে না মা। কিছুই মনে থাকে না।

আপনার গলার স্বর এমন শুনাচ্ছে কেন চাচাজি? আপনার শরীর কি ভালো?

আমার শরীর ভালো। তোমার জন্যে একটা সুসংবাদ আছে।

কী সুসংবাদ?

আসলে সুসংবাদ দু’টা। একটা এখন বলি। আরেকটা পরে বলব। সামনা সামনি বসে বলব।

না চাচাজি, দু’টাই এখন শুনব।

প্রথম সুসংবাদ হলো—তোমার মা’র ঠিকানা বের করেছি। এখন আর যোগাযোগ করতে অসুবিধা হবে না।

যে যোগাযোগ করতে চায় না তার সঙ্গে যোগাযোগ করা কি ঠিক? দুনম্বর সুসংবাদটা কী?

সঞ্জু তোমাকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছে। কী মা খুশি?

কনক কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল, চাচাজি আপনি খুশি হলেই আমি খুশি।

এই বাড়িতেই থাকবে। কোথাও চলে যেতে হবে না। বদরুল এসে দেখবে তার মেয়ে আমার কাছেই আছে। সে কী খুশিই না হবে।

বাবা আসবে মানে?

ফরহাদ উদ্দিন গলার স্বর নামিয়ে প্রায় ফিসফিস করে বললেন–কনক শোন, আমার মনের সব ইচ্ছা একে একে পূর্ণ হওয়া শুরু হয়েছে। কুড়ি বছর পার হতে বেশি বাকি নেই তো এই জন্যেই ঘটনাটা ঘটছে। আমার ইচ্ছা ছিল সঞ্জুর সঙ্গে তোমার বিয়ে দেয়া—সেটা হচ্ছে। ঘ্রাণশক্তি যেন ফিরে পাই এই ইচ্ছাটাও ছিল। হঠাৎ হঠাৎ ঘ্রাণ পাচ্ছি। সালু মামা চিকেন কাটলেট খাচ্ছিল। চিকেন কাটলেটের সঙ্গে সস, কাঁচামরিচ আর পিঁয়াজ দিয়েছে। সালু মামা যেই একটা কাঁচামরিচে কামড় দিলেন ওমনি কাঁচামরিচের ঘ্রাণ পেলাম।

চাচাজি আপনার শরীর কি ভালো?

হা শরীর ভালো।

আমার কেন জানি মনে হচ্ছে আপনার শরীর ভালো না। আপনি এক কাজ করুন। অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বাসায় চলে আসুন।

অফিস থেকে ছুটি নিব কিন্তু বাসায় আসতে দেরি হবে রে মা। অনেক কাজ বাকি। তোমাদের বিয়ের কার্ড ছাপতে দিতে হবে। আজ দিনে দিনে কার্ড ছাপায়ে বাসায় নিয়ে আসব।

চাচাজি বিয়েটা কবে?

এইখানে একটা মজা আছে রে মা। বিরাট মজা।

ফরহাদ উদ্দিন ছেলেমানুষের মতো কুই কুই করে হাসছেন। কনক হ্যালো হ্যালো বলছে তিনি তা শুনতে পাচ্ছেন না। তার খুবই হাসি পাচ্ছে।

.

ফরহাদ উদ্দিন বাড়ি ফিরলেন রাত তিনটায়।

দুশ্চিন্তায় অস্থির হয়ে সবাই জেগে বসে আছে। মানুষটা এত রাত করে কখনো ফিরে না। কোনো একসিডেন্ট হয় নি তো? বাড়ি ফিরতে দেরি হবে এই খবর টেলিফোনে কনককে জানানো হয়েছে। সেই দেরি মানে এত দেরি? রাত আড়াইটার সময় সঞ্জু বের হয়েছে হাসপাতালে হাসপাতালে খোঁজ নিতে। রাহেলা নফল নামাজ পড়তে বসেছেন। কলিং বেলে শব্দ না হওয়া পর্যন্ত তিনি নামাজ ছেড়ে উঠবেন না।

কলিং বেল বাজতেই তিনি নামাজ ছেড়ে ছুটে গিয়ে দরজা খুললেন। ফরহাদ উদ্দিন দরজা ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। তার মুখ দিয়ে ভকভক করে দুর্গন্ধ আসছে। তিনি সহজভাবে দাঁড়াতেও পারছেন না।

রাহেলা আতঙ্কিত গলায় বললেন, কী হয়েছে?

ফরহাদ উদ্দিন হাসিমুখে বললেন, তেমন কিছু না। মদ খেয়েছি। একটা বিয়ার খেয়েছি। আর দুই গ্লাস হুইস্কি।

রাহেলা স্বামীর হাত ধরলেন। মেয়েরা চোখ বড় বড় করে বাপকে দেখছে। এমন অদ্ভুত দৃশ্য তারা আগে কখনো দেখে নি। ফরহাদ উদ্দিন মেয়েদের দিকে তাকিয়ে বললেন–সস্ত্রর বিয়ের কার্ড ছাপতে দিয়ে এসেছি। চারদিকে রুপালি বর্ডার। কাল সকালে ডেলিভারী দিবে।

রাহেলা বললেন, কথা বলতে হবে না। এসো বিছানায় শুয়ে পড়। কথা যা বলার সকালে বলবে।

.

ফরহাদ উদ্দিন সাহেবের রাতে খুব গাঢ় ঘুম হলো। শেষ রাতে স্বপ্ন দেখলেন বদরুলকে। বদরুলের মুখ ভর্তি হাসি। বদরুল বলল, আমার মেয়েটার বিয়ে ঠিক করলি আমার কী যে আনন্দ হচ্ছে!

ফরহাদ উদ্দিন বললেন, তোর ছেলে পছন্দ হয়েছে তো?

বদরুল বলল, সঞ্জুর মতো ছেলে পছন্দ হবে না মানে? এরকম ছেলে কি পথেঘাটে পাওয়া যায়?

তুই খুশি তো?

অবশ্যই খুশি।

খুব আয়োজন করে বিয়েটা দিতে পারছি না। ব্যাক ডেটে বিয়ে হচ্ছে। তুই কিছু মনে করিস না।

যেভাবে সুবিধা তুই সেভাবে দে।

বিয়ের কার্ড আগামীকাল দিবে। কার্ড বেশি ছাপানো হয় নি। অল্প ছাপানো হয়েছে। তুই তো নিখোঁজ হয়ে আছিস। তোকে কার্ড কীভাবে পৌঁছাব?

আমাকে নিয়ে তুই একদম ভাবিস না। তুই আরাম করে ঘুমো। আমি তোর মাথার চুল টেনে দিচ্ছি।

স্বপ্নে বদরুল তাঁর চুল টেনে দিতে থাকল। তিনি আবারো স্বপ্নহীন গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলেন।

<

Humayun Ahmed ।। হুমায়ূন আহমেদ